চিকিৎসা, ব্যবসায়, শিক্ষা, পর্যটন, তীর্থ, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎসহ নানা কারণে বাংলাদেশের মানুষ ভারতমুখী এবং তা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে নিকট প্রতিবেশীটির ভিসাপ্রাপ্তিও যেন দিন দিন দুরূহ হয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা সুবিধা দেওয়ার জন্য ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি ভারত-বাংলাদেশের স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তি বিদ্যমান। সেই চুক্তি অনুযায়ী ৬৫ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সী বাংলাদেশিদের ৫ বছর মেয়াদি ভারতীয় ভিসা পাওয়ার কথা। আর ৬৫-এর কম বয়সীদের ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়ার কথা ১ বছর মেয়াদি। করোনার আগে সমঝোতা চুক্তির শর্ত মেনে ভিসা দেওয়া চলছিল। কিন্তু করোনার জন্য ২০২০ সালের মার্চ থেকে দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণ কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর ২০২১ সালে সীমিতভাবে তা চালু হলেও করোনা-পূর্ববর্তী সব ভিসা বাতিল হয়ে যায়। এমনকি নতুন করে ভিসা দেওয়ার সময় যাকে যেমন ইচ্ছা তেমন ভিসা দেওয়া শুরু হয়। কাউকে ১ মাস, কাউকে ৩ মাস বা ৬ মাস; কালেভদ্রে ১ বছরের ভিসা দেওয়া শুরু হয়। ৬৫-ঊর্ধ্ব সবাইকে ৫ বছর মেয়াদি ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। তাদের অনেকেই ১ বছর বা ৬ মাস মেয়াদি ভিসা পাচ্ছেন। মাল্টিপল এন্ট্রির জায়গায় সিঙ্গেল, ডবল ও ট্রিপল এন্ট্রি ভিসা দেওয়া হয়। ফলে ভারতগামী বেশির ভাগ লোক খুব দ্রুতই নতুন আবেদন করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ কারণে ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং সেন্টারগুলোতে অস্বাভাবিক ভিড় লেগে থাকছে।
ভারতীয় টিভি চ্যানেল নিউজ ১৮-এর খবর অনুযায়ী, ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পর্যটক গিয়েছিল ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬০ জন। সংখ্যার দিক থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৮১৭ জন ভারত ভ্রমণ করে। চলতি বছরে ভারতগামী পর্যটকের সংখ্যা যে অনেক বেড়েছে, তা বাংলাদেশের শহরগুলোতে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখেই ঠাহর করা যায়। টিভি চ্যানেলটির ভাষ্যমতে, প্রথম ছয় মাসে ভারতে যত পর্যটক গেছে তার ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ বাংলাদেশি এবং ১৮ দশমিক ১ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক।