প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশেই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ রয়েছে। বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ করা যায় কি না, এখন সেই আলোচনাও আছে। কিন্তু ৫০ বছর আগেই এই চিন্তা করেছিলেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির জ্যেষ্ঠতম সদস্য হাফেজ হাবীবুর রহমান। শুধু তাই নয়, সংসদ সদস্যদের সদস্যপদ বাতিলসম্পর্কিত সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে তিনি ওই সময়ে যে অবস্থান নেন, সেটিও তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচায়ক। উপরন্তু ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী গণপরিষদ সদস্যদের দ্বারা বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের এখতিয়ার নিয়ে ওই সময়ে বিতর্ক উঠলে হাফেজ হাবীবুর রহমান তারও যুক্তিপূ্র্ণ জবাব দেন। তাঁর সেই বক্তব্যের আলোকেই আরও একাধিক সদস্য মতামত দেন, এমনকি সৈয়দ নজরুল ইসলামও হাফেজ হাবীবুর রহমানের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, দেশ স্বাধীন হওয়ার এক বছরের মাথায় যে ৩৪ জন সদস্য মিলে নতুন রাষ্ট্রের জন্য সংবিধান প্রণয়ন করলেন, তাঁদের মধ্যে সবার বড় ছিলেন হাফেজ হাবীবুর রহমান। তিনি বঙ্গবন্ধুর চেয়েও পাঁচ বছরের বড়, যে কারণে অন্য যেকোনো সদস্যের চেয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁকে বিশেষভাবে শ্রদ্ধা করতেন।
হাফেজ হাবীবুর রহমানের জন্ম ১৯১৫ সালে চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার এখলাশপুর ইউনিয়নে; বোরোচর গ্রামের সরদার বাড়িতে। জন্মসালটি জানা গেলেও তারিখ জানাতে পারেনি পরিবারের সদস্যরা। এমন কি সংসদে সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্তেও তারিখটি পাওয়া যায়নি।
হাফেজ হাবীবুর রহমানের বাবা মৌলভী আব্দুল হামিদ। মা আনজুমান নেছা। পিতামহের নাম মেঙ্গুলিয়া সরদার। তাঁর পিতা ও পিতামহ ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের ভূস্বামী ছিলেন। হাবীবুর রহমান শৈশবে পিতৃহারা হন। তাঁর জন্মভিটা পরবর্তীকালে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।