বাস্তব জীবনের ঘটনা বার বারই পর্দায় তুলে ধরার চেষ্টা করেন পরিচালক নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ২০২৩ সালের দুর্গাপুজোয় এমনই এক গল্প দর্শকের জন্য সাজিয়েছেন এই পরিচালক জুটি। ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর মহাষ্টমীর দিন বর্ধমানের খাগড়াগড়ে একটি বিস্ফোরণ ঘটে। কেন ঘটেছিল এই ঘটনা? সেই প্রেক্ষাপটেই তৈরি হয়েছে নন্দিতা-শিবপ্রসাদের নতুন ছবি। ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের দিন প্রকাশ্যে ছবির প্রথম লুক পোস্টার। এই ছবির মাধ্যমে আবারও দেখা যাবে প্রবীণ অভিনেতা ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সঙ্গে রয়েছেন মিমি চক্রবর্তী এবং আবীর চট্টোপাধ্যায়। দু’জনেই রয়েছেন পুলিশের চরিত্রে। পোস্টারেও তা স্পষ্ট। ‘রক্তবীজ’ ছবির পোস্টারে সেই উত্তেজনাই ফুটে উঠেছে ভিক্টর, মিমি এবং আবীরের মুখে।
নতুন ছবি প্রসঙ্গে শিবপ্রসাদ বললেন,“দুর্গাপুজোর প্রেক্ষপটেই তৈরি আমাদের ছবি। আমি এবং নন্দিতাদি খুবই উত্তেজিত। এটাই প্রথম আমাদের পুজোর ছবি। পোস্টারে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে খলচরিত্রদের। দুর্গাঠাকুরের সামনে মুখোশ পরা খলচরিত্ররা। প্রশ্ন হল, মুখোশ পরা এই মানুষরা কারা?” উত্তেজিত আবীরও। এই প্রথম বার নন্দিতা এবং শিবপ্রসাদের পরিচালনায় অভিনয় করছেন নায়ক। আবীর বলেন, “আমার জীবনের অন্যতম কঠিন ছবি এটা। নন্দিতাদিদের পরিচালনায় এটাই আমার প্রথম কাজ। সবাই খুব পরিশ্রম করেছেন। মারপিটের দৃশ্যে অভিনয় করা সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছি। মিমিও খুব সাহায্য করেছে আমায়।”
নন্দিতা-শিবপ্রসাদ সাধারণত রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানার ছবি তৈরি করেন না। বেশির ভাগ পারিবারিক ড্রামাই দর্শক পেয়েছেন তাঁদের কাছ থেকে। কিন্তু এই ছবি বানানোর কথা কেন ভাবলেন তাঁরা? উত্তরে শিবপ্রসাদ বলেছিলেন, ‘‘এই ঘটনা নন্দিতাদি আর আমাকে অনেক ভাবিয়েছিল। আমরা রিসার্চ করা আরম্ভ করি। চোখে পড়েছিল খবরের কাগজের বিশেষ একটি নিবন্ধ। অনেকটা কনস্পিরেসি থিয়োরির মতো। রক্তবীজের নেপথ্যে রয়েছে এমনই একটি থিয়োরি। কী ঘটেছিল আমরা জানি, কিন্তু কেন ঘটেছিল সেটা নিয়ে অনেক থিয়োরির মধ্যে একটি থিয়োরি হল আমাদের রক্তবীজ। আমাদের প্রতিটি ছবি বাস্তবের কোনও না কোনও ঘটনার অনুপ্রেরণায় তৈরি। সংশোধনাগারে অলকানন্দা রায়-এর নৃত্য প্রশিক্ষণ থেকে ‘মুক্তধারা’। বিভূতি চক্রবর্তীর কর্মজীবন অনুপ্রেরণায় ‘কণ্ঠ’। পবিত্র চিত্ত নন্দীর বাস্তবজীবন থেকে ‘বেলাশুরু’। এই ছবিও ঠিক সে রকম। আলাদা কোনও ঘরানা বলে দেখছি না।’’