চারদিকে সবুজ গাছগাছালি। পাকা সড়ক থেকে ফসলি জমির পাশ দিয়ে ইটের রাস্তা ধরে প্রায় এক মিনিট হাঁটলে মিলবে একটি তাল গাছ। সেই তাল গাছে থাকা বাবুই পাখির বাসা জানান দিচ্ছে, নিজ ঘরে থাকতে পারার সুখ কতখানি।
বলছি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমানউল্লাহপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কথা। এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুনর্বাসিত হয়েছে ভূমিহীন-গৃহহীন ৫০টি পরিবার। যাদের নিজস্ব মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। যারা স্বপ্ন দেখত এক টুকরো ভিটের, তারা এখন জমিসহ একটি পাকা ঘরের মালিক। ঘর পাওয়া এসব মানুষরা এখন স্বপ্ন দেখছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। সমাজে মাথা উঁচু করে চলার। মূল ধারার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজেকে জানান দেওয়ার।
নাজমা বেগম প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি পাকা ঘর পেয়েছেন। তার বড় ছেলে এবার লক্ষীপুরের কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন।
ছেলে মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘রাস্তায় সরকারি জায়গার ওপর থাকতাম। সব সময় ভয়ে থাকতাম কখন যে উঠাইয়া দেয়। মা অনেক কষ্ট করে পড়ালেখাটা চালাইয়া গেছে। হিসাববিজ্ঞানে অনার্সে ভর্তি হইছি। সরকার ঘর দিয়েছে। এই ঘর থেকে অনার্স পড়া শেষ করতে চাই। জীবনে বড় কিছু হতে চাই।’
২৭ বছর আগে স্বামী হারান মরিয়ম বেগম। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে ভিক্ষা করতে হয়েছে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ মরিয়মের কথা বলতে কষ্ট হয়। পাশ থেকে বোন রোজিনা মরিয়মের জীবনের করুণ গল্প বলছেন। আর মরিয়মের চোখ দিয়ে অজোরে অশ্রু ঝরছে।