সার্ভারে ত্রুটির অজুহাতে এক মাসের বেশি সময় জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ জন্য তারা রেজিস্ট্রার জেনারেলের অফিসকে দুষছে। তবে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সারাদেশের সার্ভার ঠিক আছে। যেহেতু একই সার্ভারে সব কার্যক্রম সচল, তাই সিটি করপোরেশনের অভিযোগ সঠিক নয়। সোমবার সমকালের প্রতিবেদনে করপোরেশন সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, রাজস্ব ভাগে না পাওয়ায় সিটি করপোরেশন ইচ্ছা করে সেবাটি বন্ধ রেখেছে। যদি এ অভিযোগ সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে এটি আমাদের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ। সেবাগ্রহীতারা ফি ঠিকই দিচ্ছেন। সরকারি দুই সংস্থার মধ্যে রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
১৯ ধরনের কাজে জন্মনিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এক মাসের বেশি সময় সেবাটি বন্ধ রাখায় অনেকেই বিড়ম্বনায় পড়ছেন। আমরা নিজেদের ডিজিটাল বাংলাদেশের নাগরিক বলে কৃতিত্ব নিচ্ছি। অথচ রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের একটির সার্ভার মাসাধিককাল বন্ধ! ধরে নিলাম, সিটি করপোরেশনের দাবি সঠিক। প্রশ্ন হলো– তারা এত দিনেও বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগী হলো না কেন? সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে বিষয়টি সমাধান করে নিতে পারত।
শুধু লাভের পেছনে ছুটলে আদর্শ প্রতিষ্ঠান হওয়া যায় না। অ্যানালগ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন অনলাইনে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য ছিল সেবা সহজ করা। কিন্তু প্রযুক্তিগত দুর্বলতার কারণে মাঝেমধ্যেই সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। গতি মন্থর হওয়ায় প্রায়ই সার্ভারে প্রবেশ করা যায় না। আবার সার্ভার থেকে পুরোনো তথ্য হারিয়ে যায়। সম্প্রতি দেশের দুটি সার্ভার থেকে তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি ছিল জন্ম-মৃত্যু সনদ ইস্যুকারী রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের সার্ভার। ফলে স্বাভাবিক কারণে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। এটির যথাযথ ব্যবহার হলে প্রথমেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার তাদের বিরুদ্ধে, যারা এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।