রক্তে তিন ধরনের উপাদান বা কোষ আছে। লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা। ডেঙ্গু রুগীর প্লাটিলেট বা অণুচক্রিকার পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমে যেতে পারে, তখন রোগীর অভ্যন্তরীণ অঙ্গে (মস্তিষ্ক, চোখ, পেট ইত্যাদি) অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হতে পারে। এ থেকে রোগীর মৃত্যুঝুঁকিও থাকে। ডেঙ্গু জ্বর হলে তাই স্বভাবতই প্লাটিলেট পরীক্ষা করার প্রয়োজন পড়ে। প্লাটিলেট সাধারণত নেমে গিয়ে আবার বাড়তে শুরু করে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসা লাগে না। তবে কখনো কখনো, যদি চিকিৎসক মনে করেন তবে কারও দান করা রক্ত থেকে অণুচক্রিকা আলাদা করে রোগীর শরীরে দিতে পারেন।
রক্ত থেকে দুইভাবে অণুচক্রিকা আলাদা করা যায়। একটা পদ্ধতি হলো র্যানডম ডোনার প্লাটিলেট (আরডিপি)। এতে ৪-৬ জন রক্তদাতার কাছ থেকে রক্ত নিয়ে মেশিনের মাধ্যমে অণুচক্রিকাকে আলাদা করা হয়।
অপর পদ্ধতিতে আফারেসিস মেশিনের মাধ্যমে রক্তদাতার কাছ থেকে অণুচক্রিকা আলাদা করে নেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ায় রক্তদাতার শরীর থেকে সম্পূর্ণ রক্ত নিয়ে আফারেসিস মেশিনে প্লাটিলেট আলাদা করা হয়। রক্তের বাকি উপাদান যেমন লোহিত রক্তকণিকা, প্লাজমা পুনরায় রক্তদাতার শরীরে ফেরত দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ৪৫-৯০ মিনিট লাগে।
আফারেসিস প্রক্রিয়াই ভালো। এই প্রক্রিয়ায় প্লাটিলেট দিলে প্লাটিলেটের সংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পায়। রোগীর রক্ত গ্রহণের প্রতিক্রিয়া কম হয়, সংক্রমণের ঝুঁকিও কম থাকে। তবে মুশকিল হলো, এর খরচ বেশি। আফারেসিস মেশিনের পাশাপাশি দক্ষ প্রযুক্তিবিদের প্রয়োজন পড়ে।