বিকেল হলেই খেলতে বাইরে বের হয়ে যেত ছেলেমেয়েরা। মাঝেমধ্যে নানি-দাদি ও মায়েরা ছোট ছেলেমেয়েদের সঙ্গে লুডু কিংবা সাপ সিঁড়ি খেলতে বসে যেতেন। নব্বইয়ের দশকেই বোধ হয় এসব দৃশ্য শেষ গণহারে দেখা গেছে। আজকাল বাইরে যেমন কমে এসেছে খেলার জায়গা, তেমনি ঘরগুলোও হয়ে গেছে নিশ্চুপ। মা-বাবার জীবন এখন আগের চেয়ে অনেক ব্যস্ত। আজকাল তেমন একটা বসে না পারিবারিক আড্ডা বা খেলার আসর। স্কুলফেরত ছেলেমেয়েরা এখন আর বিকেলের অপেক্ষা করে না; স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারে বসে যায়। পর্দায় পলকহীন আটকে থাকে চোখ। শিশু-কিশোরদের এই স্মার্টফোন আসক্তি থেকে বের করে আনতে সাহায্য করতে পারে নানা রকমের খেলনা। ঘরেই খেলা যায় লুডু, ক্যারম, দাবা ইত্যাদি। বৃষ্টির দিনগুলোতেও ঘরে বসে সহজেই খেলা যায় এ ধরনের খেলা।
৫ জুলাই সকালে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের নিচতলায় খেলনার দোকান টয়েজে মা-বাবার সঙ্গে খেলনা কিনতে এসেছিল ১১ বছর বয়সী মুগ্ধ। দোকানের বিক্রেতা মাহবুব আলম একের পর এক ড্রোন উড়িয়ে দেখাচ্ছিলেন। বাবার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক হলো, কেনা হবে ক্যামেরাসহ ড্রোন। কিন্তু বাধ সাধলেন মুগ্ধর মা জুলিয়েট সরকার। বললেন, ‘ড্রোন কেনার উদ্দেশ্যই হলো স্মার্টফোন থেকে সে যেন দূরে থাকে। ক্যামেরা থাকা মানে তো সেই স্মার্টফোনই দেখবে।’
ছোট থেকেই মুগ্ধকে নানা রকম খেলনা কিনে দিয়েছেন জুলিয়েট। রং চেনার জন্য ব্লক, সংখ্যা চেনার খেলনা, লেগো সেট, প্রাণী চেনার জন্য প্লাস্টিকের ছোট ছোট জীবজন্তু ইত্যাদি। এখন বড় হচ্ছে মুগ্ধ। মুঠোফোনে যেন আসক্ত হয়ে না পড়ে, সে জন্য নতুন খেলনা কিনে দেওয়ার এই আয়োজন। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মুগ্ধ তার অন্য বন্ধুদের চেয়ে অনেক কম ফোন দেখে বলে জানালেন তার মা। ড্রোন কেনা হয়ে গেলে দুই গালজোড়া হাসি নিয়ে মুগ্ধ বলল, ‘বাবার সঙ্গে এটি ওড়াব।’