পোর্ট অব স্পেনে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে জহির খানকে ছক্কা, লর্ডসে সেঞ্চুরির পর সেই শূন্যে লাফ, মিরপুরে টানা চার হাফ সেঞ্চুরির পর এক–দুই–তিন–চার করে দেখানো হাতের চার আঙুল, সেঞ্চুরির পর প্রিয় ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর স্টাইলে দুহাত মাথার ওপরে তুলে সবাইকে চুপ থাকতে বলা...চাইলে এমন আরও কত দৃশ্যের কথাই তো বলা যায়। এক পা তুলে সেই পুল, এমসিসির কোচিং ম্যানুয়াল থেকে তুলে আনা কাভার ড্রাইভ, চোখ চোখ রেখে প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সেই পরিশীলিত মাস্তানি...১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মনে রাখার মতো স্মৃতি তো আর কম নয়। তামিম, সব ছাপিয়ে এখন যে শুধু চোখে ভাসছে আপনার কান্নাভেজা মুখ। এটাই কি ক্রিকেটার তামিম ইকবালের শেষ স্মৃতি হওয়ার কথা ছিল!
বাবার স্বপ্ন পূরণের যে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলেন, যে খেলাটিতে বিশ্বসেরাদের একজন হওয়ার স্বপ্নের কথা বলেছেন অনেকবার—সেই খেলাটির সঙ্গে এত বছরের সম্পর্ক এমন হ্যাঁচকা টানে ছিঁড়ে ফেলা যায়! এখনো যে তা বিশ্বাস হতে চাইছে না। এমন বিদায় তো আপনাকে মানায় না, তামিম। কেন, কেন এমন করলেন? রাগ–ক্ষোভ–অভিমানে মানুষ অনেক কিছু করে। তাই বলে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত কি নিয়ে ফেলা যায়?
সেটিও এমন এক সময়ে! একটা সিরিজ মাত্র শুরু হয়েছে, আর আপনি কিনা হঠাৎ বলে দিলেন, যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়। দলের সাধারণ একজন খেলোয়াড় হলেও ব্যাপারটা অস্বাভাবিক হতো। যেখানে আপনি দলের অধিনায়ক। এমন এক সময়ে আপনার সরে যাওয়া, যখন বিশ্বকাপের মাস তিনেকও বাকি নেই। যে বিশ্বকাপে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সম্মানের একটি। কদিন আগে বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা করার পর আপনিই না এই টুর্নামেন্টের মহিমা নিয়ে কত কথা বললেন! গত বছর মার্চে নেওয়া সেই সাক্ষাৎকারটার কথাও তো মনে পড়ছে। যেটিতে আপনি বলেছিলেন, ওয়ানডে সুপার লিগে অন্তত চার নম্বরে থেকে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে চান। নইলে ভারতে গিয়ে নিজেদের শিরোপার দাবিদার হিসেবে দাবি করবেন কীভাবে?