অধ্যাপক ড. এ এম সাহাবউদ্দিন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের ডিন। দেশের মৎস্য চাষের অগ্রযাত্রা, প্রযুক্তির ব্যবহার, অ্যাকোয়াকালচার সিস্টেম, উন্নত জাতের উদ্ভাবন, সরকারি-বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ, মাছ রফতানি ও অন্যান্য প্রসঙ্গে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আবিদ মঈন খান
বাংলাদেশের স্বাধীনতা-উত্তর মৎস্য চাষের অগ্রযাত্রা ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ কী রকম দেখছেন?
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন ক্রমাগত বেড়েছে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো জলাশয়ের সংখ্যা কমেছে, জলদূষণ বেড়েছে, বসতবাড়ি নির্মাণের কারণে আবাদি জমি কমেছে। বর্তমানে মৎস্য উৎপাদন ৪৫ লাখ টনেরও বেশি। সরকারের পরিকল্পনা এটি দ্বিগুণ করা। ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বে এখনকার উৎপাদনের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ মাছের চাহিদা তৈরি হবে। আর এ মাছের জোগান দিতে হবে চাষ থেকে। কারণ আহরণের মাছের পরিমাণ শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই কমছে। ভবিষ্যতে মাছ চাষে চীন ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মাছের উৎপাদন দ্বিগুণ করতে পারলে আমরা যেখানে বিশ্বে বর্তমানে পঞ্চম অবস্থানে আছি, সেখান থেকে এগিয়ে যাব। দেশের মাটি, পানি ও জলবায়ু মাছ চাষের উপযুক্ত। গ্রামবাংলায় আসলে মাছ চাষের জন্য পুকুর কাটা হয় না। নানা প্রয়োজনে মাটি কাটার পর খানাখন্দ হলে সেগুলো পুকুর হিসেবে ব্যবহার হতো। এখন আধুনিক পদ্ধতি আসায় মাছ চাষ একটি বাণিজ্যিক রূপ পেয়েছে, চাষীরা শুধু নিজের ঘরের প্রয়োজন মেটানোর জন্য মাছ চাষ করেন না। কারণ মাছের চাহিদা বেড়েছে, মানুষ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানছে, অল্প জায়গায় কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায় তা শিখছে। প্রথম দিকে নদী-নালা-বিল থেকে মাছ ধরা হতো, পরে বিভিন্ন জাতের মাছ একসঙ্গে করে মিশ্রচাষ করা হতো এবং সেখান থেকে যখন দেখা গেল মিশ্র চাষে অল্প পরিমাণে মাছ হয়, তখন একক চাষ করা হয়েছে বা অধিক ঘনত্বে নির্দিষ্ট একটি জাতের মাছের চাষাবাদ করা হয়।