অনেক ভালো জিনিসেরও ‘মন্দ’ দিক আছে। অবিমিশ্র বলে খুব কম জিনিসই আছে। তেমনই কি আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, এমনকি ‘রেমিট্যান্স’। এ দুটোর ফলে কি অকর্মণ্য লোকের, ‘ভাদাইমা’ গোছের অলস লোকের জন্ম হচ্ছে কোনো না কোনোভাবে। অবশ্য সামাজিক নিরাপত্তা/সুরক্ষা কর্মসূচি (সোশ্যাল সেফটি নেট) এবং রেমিট্যান্সকে জড়িয়ে আরো অনেক ইস্যুর জন্ম হচ্ছে/হয়েছে। যেমন ধরা যাক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কথা। এর প্রকৃত বরাদ্দ/আকার কত এ সম্পর্কে জনমনে প্রশ্ন জাগছে। কারা এ কর্মসূচির আওতায় সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যারা এ কর্মসূচির অধীনে পড়ার কথা তারা কি সত্যি সত্যি পড়ছে, না প্রভাবশালী লোকজনের মনোনীত ব্যক্তি/সমর্থকরা এ কর্মসূচির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে? প্রায় একই ধরনের সামাজিক ইস্যু আছে রেমিট্যান্সকে ঘিরে। এ প্রশ্নে পরে আসছি। আগে দেখা যাক সামাজিক নিরাপত্তার প্রশ্নটি। বলা হচ্ছে, এ কর্মসূচির অধীনে ১১৫-২০টি কর্মকাণ্ড আছে। বিভিন্ন শ্রেণী/পেশার ব্যক্তি যেমন এর উপকারভোগী, তেমনি উপকারভোগী সংগঠন, ব্যবসায়ী-ছাত্র-ছাত্রী ইত্যাদি শ্রেণীর লোকও। যদি বরাদ্দের কথাই ধরা যায়, তাহলে খবরের কাগজে প্রকাশিত গবেষণা তথ্যে দেখা যাচ্ছে মোটামুটি ৬০ শতাংশ বরাদ্দ উচিতমতো ব্যয় হচ্ছে। অর্থাৎ ব্যয় হচ্ছে গরিব-দুঃখী, অতিদরিদ্র, অসহায়, সম্বলহীন, দুস্থদের মধ্যে। অবশ্য এর মধ্যেও কথা আছে। যারা পাচ্ছে তাদের তালিকা নিয়ে। দেখা যাচ্ছে, দরিদ্র অতিদরিদ্রের মধ্যে যারা পাওয়ার কথা তারা পাচ্ছে না, আর পাচ্ছে যারা পাওয়ার কথা নয় তারা। বাদ দিলাম এ বিষয়। এর চেয়ে মারাত্মক আরো বিষয় আছে। সামাজিক নিরাপত্তা বলতে কী বোঝায়? এর মধ্যে কী কী পড়ে? কারা এর উপকারভোগী হওয়ার কথা? কী কী শর্তপূরণ করলে এ কর্মসূচির অধীনে সরকারি আর্থিক সুবিধা পাওয়া যাবে। যেমন হতে পারে অসহায়/অসচ্ছল একজন যিনি। বিনা দ্বিধায় বলা চলে তিনি সরকারি ভাতা পেতে পারেন। স্বামী পরিত্যক্তা/নির্যাতিতা সহায় সম্বলহীন সন্তান-সন্ততিসহ একজন নারী। তিনিও পেতে পারেন সরকারি ভাতা। অসহায় বয়স্ক/বৃদ্ধ ব্যক্তি যার কোনো সহায়সম্বল নেই, তিনিও পেতে পারেন সরকারি সুবিধা। সরকারি হিসাবেই রয়েছে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠী। তাদের সরকারি মাসিক ভাতা দিলে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। প্রতিবন্ধী, ঘোরতর আহত ব্যক্তি হতে পারে এর তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগী।