আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে আয়কর রিটার্ন জমাদানকারী মাত্রই বাৎসরিক ন্যূনতম দুই সহস্র টাকা আয়কর দিবার যেই বিধান যুক্ত হইয়াছে, উহা সুবিবেচনাপ্রসূত হইতে পারে না। প্রথমত, ইহা কার্যকর হইলে যাহার করযোগ্য আয় নাই, তাহাকেও আয়কর দিতে বাধ্য করা হইবে। যাহার ফলে সমাজে বিদ্যমান ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য অধিকতর মাত্রায় বৃদ্ধি পাইবে। দ্বিতীয়ত, এইরূপ বিধান করমুক্ত আয়ের সীমার ধারণাকে হাস্যকর করিয়া তুলিতে পারে। করমুক্ত আয়ের সীমা নির্ধারণের পশ্চাতে যুক্তি হইল– নির্দিষ্ট আয়ের নিম্নের পরিবারসমূহকে কিঞ্চিৎ স্বস্তি দিবার প্রচেষ্টা। ঐরূপ পরিবারসমূহ যাহাতে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় কিঞ্চিৎ হইলেও সঞ্চয় করিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করিয়া দেওয়া। এই কারণেই আমরা অবলোকন করি বাজেটের পূর্বে প্রতি বৎসর সচেতন নাগরিকদের মধ্য হইতে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির দাবি উঠে এবং সরকারও মাঝেমধ্যে উহাতে কর্ণপাত করে। যেমন আসন্ন অর্থবৎসরের প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা সাধারণের জন্য পূর্বের ৩ লক্ষ হইতে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকায় উন্নীত করিয়াছে এবং নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য উহা সাড়ে ৩ লক্ষ হইতে ৫০ সহস্র বাড়াইয়া ৪ লক্ষ টাকা করা হইয়াছে। অর্থাৎ এ বিধান অনুসারে বার্ষিক সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার কম আয়ের মানুষদের পাশাপাশি বার্ষিক ৪ লক্ষের কম টাকা আয়কারী নারী ও প্রতিবন্ধী মানুষদের আগামী বৎসর কোনো আয়কর দিবার কথা নহে। কিন্তু আলোচ্য বিধানটির কারণে এই শ্রেণির মানুষদের জন্য কোনো স্বস্তি রহিল না।