বাজেট নিয়ে সাধারণ মানুষের বেশ ভীতিই শেষ পর্যন্ত সঠিক হলো। বাজেট নিয়ে মানুষের চাওয়া-পাওয়া তো পূরণ হয়ইনি; বরং আরও বোঝা হয়ে এল। মানুষের চাওয়া ছিল মূল্যস্ফীতি কমানো, চাকরির বাজার বৃদ্ধি, দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেখা। তাদের এই বাজেটের দরকার নেই, যেখানে বড়লোক আরও বড়লোক হচ্ছে, মধ্যবিত্ত হচ্ছে গরিব, যা অর্থনীতি সমিতির কথাতে এসেছিল। আগের একটা লেখাতে বাজেটে সাধারণ মানুষের চাওয়া নিয়ে লিখেছিলাম। কিন্তু এসব ছোট চাওয়াই আমাদের পূরণ হওয়ার বাজেট এবার হয়নি। আর প্রস্তাবিত বাজেটের আগের সামন্তযুগের মতো জনগণের মতামতের কোনো গুরুত্বও নেই।
এই সংকোচনের বছরে এবারও বাজেটে উচ্চ প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে। ফলে কর জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর জন্য মানুষের ওপর চাপ বেড়েছে। সেই চাপের সব থেকে বড় উদাহরণ আয়কর রিটার্ন করতে গেলেই দুই হাজার টাকা ন্যূনতম।
এটা আয়কর নীতিরই পরিপন্থী। আয়কর না হলে কেন দেব? এদিকে সরকারি সেবা পেতে গেলে প্রায় সব খাতেই আয়কর নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। ফলে এখন আয়কর নিবন্ধন করে যদি রিটার্ন দাখিল না করেন, আপনি জরিমানা বা ক্ষেত্রবিশেষে জেলেও যেতে পারেন। তার মানে, আয়কর নিবন্ধন করলেই আপনার দুই হাজার টাকা ন্যূনতম দিতে হবে। এখন যাঁর বেতন ১৫ হাজার (মূল বেতন না মোট বেতন), তাঁর বেতন থেকে বছরে ২ হাজার টাকা কেটে নেওয়াটা অমানবিক নয়? কোম্পানির তো যে বেতন ব্যাংকে যাবে, তার থেকে আয়কর কর্তন শুধু বাধ্যতামূলকই নয়, আয়কর জমা পড়েছে কি না, তা দাখিল করাও বাধ্যতামূলক।
এ নিয়ে নানা সমালোচনার পর সরকারের বোধদয় হচ্ছে, এমনটি মনে হচ্ছে। এই দুই হাজার টাকার আয়করের বিষয়টি বাদ পড়তে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।