আমাদের দেশের ভারী শিল্প-কারখানাগুলো সাধারণত রাজধানী এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া দেশের বিভাগীয় শহর অথবা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভারী শিল্পকারখানাগুলো নজরে পড়ে। এতে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত বর্জ্যে শহরদূষণের পাশাপাশি নদী-খাল দূষণের শিকার হচ্ছে ব্যাপকভাবে। শুধু তা-ই নয়, দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া ও পরিবেশের প্রধান উপাদানগুলো শিল্পদূষণের মারাত্মক শিকার হচ্ছে; বিশেষ করে কারখানার বর্জ্য পানি সরাসরি নদীতে ফেলার কারণে বিষাক্ত রাসায়নিক, জৈব সংক্রামক ও ক্ষতিকর গ্যাসীয় পদার্থের মিশ্রণ ঘটছে। ফলে নদী-খালের পানি বিষাক্ত হয়ে যেমন বিবর্ণ হচ্ছে, তেমনি জলজ উদ্ভিদসহ মাছ, পোকামাকড় ও অণুজীব বাসস্থান হারাচ্ছে। এ ছাড়া এই পানি ব্যবহারের কারণে মানুষ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে; বিশেষ করে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরণও করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৭ সালের এক প্রতিবেদনমতে, অনিরাপদ পানি সরবরাহের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে ৪ বিলিয়ন মানুষ ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।