ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ রোববার দুপুরের পর উপকূলে আছড়ে পড়ার আগে যতখানি শঙ্কা জাগিয়েছিল, পরে যেন ততটাই স্বস্তি রেখে গেল। সোমবার সকালে ঢাকায় দুই অফিযাত্রীর ‘আক্ষেপ’ কানে এলো– এ কেমন ঘূর্ণিঝড়, তাপদাহে জেরবার এই শহরে সামান্য বৃষ্টিও ঝরাতে পারল না! কিছুই যে ক্ষতি হয়নি, তা নয়। বাস্তবতা হচ্ছে, যে ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে, আশঙ্কার তুলনায় তা সামান্যই। এই মন্দের ভালোটুকুই স্বস্তিকর।
বস্তুত বঙ্গোপসাগরবক্ষে জন্ম নিয়ে মে মাসের গোড়া থেকে যখন গুটিগুটি পায়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছিল, তখন ঘূর্ণিঝড়টির গতি ও মাত্রা সম্পর্কে ভয়-জাগানিয়া নানা তথ্য জানা যাচ্ছিল। আবহাওয়া ও দুর্যোগ সম্পর্কিত নানা বিশেষজ্ঞ ও প্রতিষ্ঠানকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছিল, গতির দিক থেকে এই ঝড় সিডর বা তার চেয়েও ভয়ংকর হতে পারে। জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা সুনামির মতো হতে পারে। সেন্টমার্টিন দ্বীপ তো সম্পূর্ণ তলিয়ে যাবেই; অংশবিশেষ ধসেও যেতে পারে। আর নানা কারণে ইতোমধ্যে নাজুক হয়ে পড়া পার্বত্য অঞ্চলে দেখা দিতে পারে পাহাড়ধস। সৌভাগ্যক্রমে এসব বিপদের কোনো কিছুই ঘটেনি। মোকা যখন উপকূলে এসেছে, প্রাকৃতিক নানা কারণেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
প্রশ্ন হচ্ছে, যদি মোকা পূর্বাভাসমতোই জলে ও বায়ুতে সমান শক্তি নিয়ে আঘাত হানত, তাহলে কী ঘটত? আমার ধারণা, সম্পদহানি বাড়ত; প্রাণহানি নয়। কারণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলের সম্ভাব্য সবাই নিরাপদ আশ্রয় বা স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গিয়েছিলেন।