পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে যে কয়েকটা প্রযুক্তি, তার মধ্যে অন্যতম ডিএনএর আবিষ্কার। ডিএনএনির্ভর জীবপ্রযুক্তি ও জিন প্রকৌশল কোটি কোটি মানুষকে দিয়েছে নতুন করে বাঁচার সুযোগ, খাদ্যসংকট থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখাচ্ছে, পরিবেশকে বসবাসের যোগ্য করে তুলতে দিয়েছে নতুন সমাধান। মানুষ, উদ্ভিদ, অণুজীব, প্রাণীসহ সব জীবন্ত বস্তুর কোষের সব কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণে থাকে ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড তথা ডিএনএ। এই ডিএনএতে থাকা বিভিন্ন জিন একক বা সমন্বিতভাবে শরীরের একেকটি কাজের জন্য দায়ী। ডিএনএর মাঝে পরিমার্জন বা সংযোজনও এখন সম্ভব বায়োটেকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নামক দুটি প্রযুক্তিকে ব্যবহারের মাধ্যমে। কিন্তু এ প্রযুক্তির ব্যবহার আমরা কতটুকু করতে পেরেছি?
ডিএনএ আবিষ্কারের ৭০ বছর উদ্যাপিত হচ্ছে পৃথিবীজুড়ে। যেখানে ৮ হাজার ৫৯০ কোটি ডলারের আয় হয়েছে ২০২১ সালে পৃথিবীতে এ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে, সেখানে বাংলাদেশ কতটুকু ডিএনএ আবিষ্কারের সুযোগকে কাজে লাগানো ও ব্যবহার নিয়ে ভেবেছে? উত্তরে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার মতো কিছুই নেই।
জীবপ্রযুক্তিভিত্তিক আমাদের তেমন বেশি উল্লেখযোগ্য নিজস্ব কোনো উদ্ভাবন নেই। কিন্তু কেন? আমাদের এখনই ভাবতে হবে, কাজ করতে হবে।
সাম্প্রতিক কোভিড টিকা আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে জীবপ্রযুক্তিকে যথাযথ ব্যবহার ও গবেষণার কারণে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা আর মডার্নার মতো টিকাগুলো একদিকে যেমন এক নতুন পৃথিবীতে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে কোটি কোটি মানুষকে, ঠিক তেমনি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোর জন্য তৈরি করেছে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যের দুয়ার। মেডিকেল ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জীবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে বায়োমার্কার, যা ক্যানসার, হৃদ্রোগ, কিডনি রোগসহ বিভিন্ন রোগ সঠিকভাবে শনাক্তকরণ এবং তার জিনকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যথাযথ চিকিৎসার জন্য সাহায্য করছে। মাইক্রোরে, নেক্সট জেনারেশন সিকুয়েন্সিং, এক্সোম সিকুয়েন্সিংয়ের মতো প্রযুক্তি অনেক সহজতর করে দিয়েছে রোগনির্ণয়, রোগের কারণ অনুসন্ধান ও সংক্রমণের প্রকৃতি জানাকে।