বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ গ্রহণে যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল তা হোঁচট খেয়েছে। আট মাসে ঋণ সংগ্রহের বিপরীতে পুরাতন সঞ্চয়পত্র থেকে বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে।
অন্যদিকে ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়ছিল ৮ মাসেই পুরো বছরের ঋণকে ছুঁয়ে গেছে।
সরকার উচ্চ খরচের (সুদ হার) ঋণ থেকে বের হয়ে আসার লক্ষ্য থেকে সঞ্চয়পত্র থেকে কম ঋণ নিচ্ছে বলে মনে করছেন পিআরআইএর নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সঞ্চয়পত্রে বেশি সুদ দিতে হয়। এ সুদ হার ১০ শতাংশ পর্যন্ত বা তারও বেশি। আর ব্যাংকে চার শতাংশ সুদেই ঋণ পাচ্ছে। এ জন্য সরকার ইচ্ছা করেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে। এতে সরকারকে কম সুদ গুনতে হচ্ছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ২১ দশমিক ৬ শতাংশ। এ ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে অর্থ সংগ্রহ করার লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে সংগ্রহ করার লক্ষ্য ছিল ৫ হাজার ১ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন ও আয়কর রিটার্নসহ নানা ধরনের ফর্মালিটিজ। এত সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের দিকে যাচ্ছে না। কমছে সঞ্চয়পত্রের ঋণ। আর বাড়ছে ব্যাংক থেকে।
অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি আট মাসে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৯৪ কোটি টাকা। আট মাসেই পুরো ঋণের লক্ষ্যকে ছুঁয়ে গেছে। আর স্বাধীনতা পরবর্তী ৫১ বছরে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের পুঞ্জিভুত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা।
বাজেটের ঘাটতি পূরণে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণের লক্ষ্যের পরিবর্তে উল্টো পথ ধরেছে। সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে সংগৃহিত সরকারের পুরোনো ঋণ থেকে তিন হাজার ৫০৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে।
জাতীয় সঞ্চয়পত্রের হাল নাগাদ তথ্য বলছে, জুলাই-ফেব্রুয়ারি ৮ মাসে ৫৫ হাজার ৮৬২ কোটি ১২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রির বিপরীতে একই ৫৯ হাজার ৩৭১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা মানুষ তুলে তুলে নিয়ে গেছে।