যেসব কথা ও কাজ সন্তানের আত্মবিশ্বাস ভেঙে দিতে পারে

ডেইলি স্টার প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২৩, ১৭:৩৪

ঈশ্বরী পাটনী যেন তার অন্নদামঙ্গল কাব্যে জগতের সব বাবা-মায়েদের প্রতিনিধি হয়েই বলেছিলেন, 'আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে।' দেশ-কাল-সীমানার গণ্ডি যত আলাদাই হোক না কেন, সন্তানের মঙ্গল কামনায় বাবা-মায়ের শুভচিন্তাই স্বাভাবিক। 


তবে প্রজন্মের ফারাক বা মতভেদের ভিন্নতার কারণে সন্তান লালন-পালনের সময় প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় বাবা-মা এমন কিছু ভুল করে বসেন, যার আজীবন মাশুল দিতে হয় সন্তানদের। তারা বড় হন, বেড়ে ওঠেন– কিন্তু বাবা-মায়ের সেই ভুলগুলো থেকে বেরোতে পারেন না। এমনই একটি বহুল চর্চিত ভুল হচ্ছে বিভিন্নভাবে সন্তানের আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেওয়া। 


এর ফলে অনেকেই জীবনভর নিজেকে নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। এ ধরনের ৫টি আচরণ ও কীভাবে এগুলো থেকে বিরত থাকা যায়, সে বিষয়ে আজকে আলোচনা করা হবে– যাতে অন্তত নতুন বাবা-মায়েরা সচেতন থাকতে পারেন।


বাঁকা কথা বলা


শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। ছোটবেলা থেকেই তারা বাবা-মা, পরিবারের বড়দের আচরণ দেখে শিক্ষা নেয় এবং পরিবারের বাইরে গেলে সেভাবেই চলার চেষ্টা করে। সে ক্ষেত্রে বাবা-মা কীভাবে তাদের সন্তানের সঙ্গে বা নিজেদের মাঝে কথা বলছেন, একটি শিশুর লালন-পালনে তা অনেক বড় ভূমিকা রাখে। 


কথা বলার সময় বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন সহজ-সাবলীল ও ইতিবাচকভাবে কথোপকথন চালিয়ে যান। একে অপরের সঙ্গে বা সন্তানের সঙ্গে বাঁকা কথা বলার চর্চা একেবারেই সুস্থ চর্চা নয়। এতে কারোরই মানসিক স্বাস্থ্যে এর ভালো প্রভাব পড়ে না, শুধু পারিবারিক মিষ্টি আবহে অনাকাঙ্ক্ষিত বিষাক্ত বাতাস বয়ে যায়। 


কখনো যদি রাগের বশে এমন কথাবার্তা চলেও আসে, বাবা-মায়ের উচিত হবে সেটি বাচ্চাদের আড়ালে গিয়ে বলা। সচেতনতা এখানে বড় ভূমিকা পালন করবে।
  
দোষারোপ করা


মানুষমাত্রই ভুল করে। শিশু অবস্থায় বা বেড়ে ওঠার সময়টায় অনভিজ্ঞতা বশত এসব ভুলের মাত্রা আরও বেশি হবে, সেটাই স্বাভাবিক। তবে সেই সব ভুলে আতশকাঁচ রেখে অবিরাম দোষারোপ করতে থাকলে সেই ভুলের গণ্ডি ছাড়িয়ে ওঠাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। একবার ভুল করেছে বলে কখনোই তা ঠিকভাবে করতে পারবে না, এমন ভুল ধারণাও শিশুমনে বাসা বাঁধে। আর তা থেকে জন্ম নেয় আত্মবিশ্বাসের অভাব। 


অতীতকে টেনে আনা


এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয় আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বর্তমানে বাস করে বারবার অতীতের ঘটনা উল্লেখ করে, এতে কার কী ভুল হয়েছিল– কার কী মনে রাখা উচিত ছিল ইত্যাদি ধরনের কথাবার্তা না বলাই ভালো। এতে শিশুটি বর্তমানে ভালো কিছু করলেও নিজের অতীত নিয়ে অতি ভাবনার শিকার হতে পারে, যা কিনা তাকে কখনোই সম্পূর্ণরূপে আত্মবিশ্বাসী হতে দেবে না। 


এর পরিবর্তে বরং শিশুকে শেখানো উচিত, অতীতে যা গেছে, তা গেছে এবং আমাদের কাছে এখনো বর্তমান ও ভবিষ্যত রয়েছে। আমরা চাইলেই নিজেদেরকে প্রতি মুহূর্তে আরেকটু সমৃদ্ধ করে তুলতে পারি– এই ভাবনাটি তাদের মধ্যে বীজের মতো রোপণ করলে একদিন আত্মবিশ্বাস ও শুভচিন্তার মহীরূহ বেড়ে উঠবে।


অন্য বাচ্চাদের উদাহরণ দেওয়া


বাংলাদেশে বেড়ে ওঠা বাচ্চাদের মধ্যে অনেকেরই বোধহয় প্রতিবেশি বা সহপাঠী শিশুটির পা ধোয়া পানি খেতে বলা হয়েছে, এমন অভিজ্ঞতা আছে। পড়াশোনা, পুরস্কার প্রাপ্তি, এমনকি নিয়মতান্ত্রিক দিন কাটানোর মতো দৈনন্দিন সব বিষয়ে অন্যের উদাহরণ টেনে এনে বাবা-মায়েরা মূলত সন্তানকে আরও উৎসাহী করে তুলতে চান। তাদের মনে হয়, এতে করে তারা তাদেরকে প্রতিযোগী হতে সাহায্য করছেন। কিন্তু এই প্রতিযোগিতা কখন যে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় রূপ নেয়, তা হয়তো তারা নিজেও বুঝতে পারেন না। 


এ ধরনের কথাবার্তার দু ধরনের নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায়। সন্তানটি বড় হবার পরও নিজেকে সেই প্রতিবেশী বা সহপাঠীটির চেয়ে অধঃস্তন মনে করার প্রবণতা জন্ম নিতে পারে, অথবা সেই শিশুটিকে আজীবন প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে জেদ ধরে রাখতে পারে। একটি সুস্থ জীবনের জন্য উভয় পরিস্থিতিই কাম্য নয়।


বেড়ে ওঠার সময়ে আত্মবিশ্বাসের চর্চা পরবর্তী জীবনে ব্যক্তিকে দৃঢ় হতে সহায়তা করে। লালন-পালনের সময়ে বাবা-মা, এমনকি পরিবারের বড় সবারই উচিত এই দিকগুলোর দিকে খেয়াল রাখা– যাতে জীবনের ইমারত গঠনের প্রথম দিকের ইটগুলো নড়বড়ে না হয়। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us