কোন পেশার মানুষকে মারধর বা হামলা করা সহজ? চিন্তা না করেই উত্তর দেওয়া যায়, সাংবাদিকদের। একমাত্র পেশাজীবী সাংবাদিকের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। চিকিৎসকদের কিছু বললে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত, সাথে সাথে পুলিশ ক্লোজ, পরিবহন শ্রমিকদের কিছু বললে পরিবহন ধর্মঘট।
সরকার ক্ষুব্ধ থাকে, বিরোধী দলের অভিযোগের পাহাড়, দুর্নীতি অনিয়মবাজদের চক্ষুশূল, ব্যাংক লুটেরাদের দুশমন সবই সাংবাদিক। সব দোষ ওই ব্যাটা নন্দ ঘোষের। এই সমাজের নন্দ ঘোষই হচ্ছে সাংবাদিক।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে কয়েক বছর ধরেই আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। সাদা দলের প্রতিনিধিত্ব করছে আওয়ামী লীগ পন্থী আইনজীবীরা। আর বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা আছেন নীল দলে।
নির্বাচনের আগের রাতে ওয়াটসঅ্যাপে মেসেজ আসলো সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচনকে ঘিরে ভাঙচুর ও ব্যালট পেপার ছিনতাই হয়েছে। নিউজ এডিটর ও রিপোর্টারকে খবরের সত্যতা যাচাই করতে বললাম। রাতে নিউজ অন এয়ার হলো। পরের দিন বিশেষভাবে আইনজীবীদের নির্বাচনের ইভেন্ট গুরুত্ব দিয়ে কাভার করার জন্য নিউজরুমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় সব গণমাধ্যমই পরেরদিন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য পরিকল্পনা করেছিল। সব কাজের মাঝে চোখ ছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকেই।
সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলার কথা যখন শুনছি, একেবারেই হতবাক হয়ে যাই। কেননা ওখানে পক্ষ দুটি, বিবাবদমান গ্রুপ দুটি। একদল নির্বাচন বানচাল করতে চায়, আরেক দল নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায়। ভাঙচুর বা ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগ এক গ্রুপের আইনজীবীদের দিকে। তাহলে সাংবাদিকরা পুলিশের নিশানায় কেন?
আইনজীবীদের দুই গ্রুপই সাদা শার্টের ওপর কালো কোর্ট পরিহিত। আর পুলিশ তার নিজ পোশাকে ঘটনাস্থলে। একমাত্র পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োজিত সাংবাদিকদের নির্দিষ্ট পোশাক ছিল না। তবে টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সনদের হাতে ক্যামেরা, সাংবাদিকের হাতে মাইক্রোফোন, প্রিন্ট ও অনলাইনের সাংবাদিকের কাছে নিজ নিজ অফিসের পরিচয় পত্র ছিল।