দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) উদ্যোক্তাদের ৭৪ শতাংশই এ খাতের সেবা নিতে গিয়ে সরাসরি দুর্নীতির মুখে পড়েন। সে জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের ঘুষ লেনদেন কিংবা রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করতে হয়েছে।
এ ছাড়া সময়-সময় চাঁদাবাজি, স্বজনপ্রীতি ও অনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার মতো বিষয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ছোট উদ্যোক্তাদের অনেকে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সম্মেলনে উপস্থাপিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। দেশের এসএমই খাতে দুর্নীতিবিষয়ক এই গবেষণার মুখ্য গবেষক ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সালেহ জহুর। এতে বলা হয়, দেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই মনে করেন যে এই খাতে দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার রয়েছে। আঞ্চলিক পর্যায়ে জরিপে অংশ নেওয়া উত্তরদাতাদের ৭৪ শতাংশ জানান যে তাঁরা দুর্নীতির সম্মুখীন হয়েছেন।
সালেহ জহুর বলেন, প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে গিয়ে ৭৮ শতাংশ ব্যবসায়ীকে নানা সময়ে ঘুষ দিতে হয়েছে। ৬০ শতাংশ রাজনৈতিক প্রভাব ও ৪৬ শতাংশ ব্যবসায়ী চাঁদাবাজির শিকার হয়েছেন। পুরো ব্যবস্থায় গলদের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) ৪৪ শতাংশ ব্যবসায়ী স্বজনপ্রীতি ও ৪৩ শতাংশ অনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার কারণে তাঁদের ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান।
অনুষ্ঠানে যৌথ প্রস্তাবনা উপস্থাপনকালে বলা হয়, দুই বছর গবেষণার পরেও এ খাতের দুর্নীতির পুরো চিত্র উঠে আসেনি। তবে একটি ধারণা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, এসএমই উদ্যোক্তারা সব কাজে একধরনের পক্ষপাতের মুখোমুখি হন। যেমন বাড়ির বিদ্যুৎ–সংযোগ নিতে খুব ঝামেলা পোহাতে না হলেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুতের সংযোগ নিতে অর্থের লেনদেন করতে হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অমিত সম্ভাবনার বড় শক্তি হচ্ছে, এসএমই খাত। এ খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হবে।