কথায় বলে, পেটে খেলে পিঠে সয়। তবে হজমে গণ্ডগোল বাধলে কোনো কিছুই ভালো লাগে না।
ভরা পেটে মন ভালো থাকে। তবে খাবার খাওয়ার পর গ্যাসের সমস্যা থেকে শুরু করে নানান যন্ত্রণা দেখা দিলে কোনো কিছুতেই তৃপ্তি মেলেনা।
আর এসব সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে কিছু মসলা বেশ ভালো কাজ করে বলে জানান টেক্সাসের ‘গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট’ কেনেথ ব্রাউন।
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি এসব মসলাকে ‘অন্ত্রবান্ধব’ বলে উল্লেখ করেন।
হলুদ
‘সোনালি মসলা’ হিসেবে খ্যাত প্রদাহরোধী উপাদান কারকিউমিন সমৃদ্ধ। যা কিনা হতাশা, আর্থ্রাইটিস ও ব্যায়ামের পর ক্ষতি পোষাতে সাহায্য করে।
ডা. ব্রাউন এসব উল্লেখ করে বলেন, “এছাড়াও কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অন্ত্রের সুস্থতায় হলুদ কার্যকর ভূমিকা রাখে। ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস)’ উন্নত করতে পারে।”
ইরানের ‘তেহরান ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্স’, ‘ইরান ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেইশন’, ‘সিরাজ ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল কলেজ’য়ের করা এই গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, রান্নায় ব্যবহার করে কিংবা ওষুধ হিসেবে গ্রহণের মাধ্যমে হলুদ আইবিএস’য়ের সমস্যা উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আদা
পেট খারাপ করলে আদা চা পানের রেওয়াজ রয়েছে।
“হজম শক্তি উন্নত করার উপাদান রয়েছে এই মসলায়। যা কিনা গ্যাসের কারণে হওয়া পেটফোলা ও অস্বস্তি কমাতে পারে”, বলেন ডা. ব্রাউন, “আরও রয়েছে প্রাকৃতিক প্রদাহরোধী উপাদান।”
ধনিয়া
শুকনা এই মসলার গুণ তুলে ধরতে ডা. ব্রাউন বলেন, “অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ধনিয়াতে রয়েছে প্রদাহরোধী উপাদান। যা হজমে উপকার করে ও অন্ত্রের কার্যক্রম উন্নত করতে সহায়ক।”
‘ইউনিভার্সিটি ব্রুনেই দারুসসলাম’য়ের করা গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে এই চিকিৎসক জানান, যকৃত থেকে বিভিন্ন হজম রস নিঃসরণে সাহায্য করতে পারে ধনিয়া। ফলে খাবার হজম দ্রুত হয়। অর্থাৎ অল্প সময়ের মধ্যে হজমতন্ত্র দিয়ে খাবার পরিবাহিত হয়ে যায়।
মৌরি
খাওয়ার পরে মৌরি চিবাতে বেশ লাগে। তবে এটা যে হজম প্রক্রিয়াকেও উন্নত করে সেটা হয়ত অনেকেরই অজানা।
ডা. ব্রাউন পরামর্শ দেন, যারা আইবিএস সমস্যায় ভুগছেন তাদের উচিত হবে রান্নায় মৌরি ও হলুদ ব্যবহার করা।
ইতালির ‘ইউনিভার্সিটি মেডিকেল স্কুল’য়ের করা গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে এই চিকিৎসক আরও জানান, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যাদের স্বল্প ও মাঝারি মাত্রায় আইবিএস সমস্যা ছিল, খাবারে মৌরি ব্যবহারের ফলে তাদের এই সমস্যার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হতে দেখা গেছে।
দারুচিনি
শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহরোধী উপাদানের জন্য সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী, জানান ডা. ব্রাউন।
তিনি বলেন, “কিছু গবেষণায় দেখা গেছে পেটফোলা সমস্যা ও হজমশক্তি উন্নত করার মাধ্যমে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে দারুচিনি।”
শুধু বেইকড করা খাবারেই নয়, স্বাদ বাড়াতে ও হজমের উন্নতিতে ওটস, পুডিং বা ফলের ওপর দারুচিনি গুঁড়া ছিটিয়ে খাওয়া যেতে পারে।