চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল (কেশবপুর) এলাকায় অবস্থিত সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ৫৫ ঘণ্টা পর মামলা করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলা ও বিস্ফোরণ পরবর্তীতে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে বিস্ফোরণে নিহত শ্রমিক আবদুল কাদেরের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
সোমবার দিবাগত রাত ১২ টার পর সীতাকুণ্ড থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ।
তোফায়েল আহমেদ জানান, মামলায় কারখানার মালিক-কর্মকর্তাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে।
মামলায় অভিযুক্ত আসামীরা হলেন, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের এমডি মো.মামুন উদ্দিন (৫৫) ,পরিচালক পারভেজ হোসেন সান্টু (৪৮), আশরাফ উদ্দিন বাপ্পি (৪২), কারখানার প্ল্যান্ট ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম (৪৫), প্ল্যান্ট অপারেটর ইনচার্জ সামসুজ্জামান শিকদার (৬২), প্ল্যান্ট অপারেটর খুরশিদ আলম (৫০), সেলিম জাহান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া, সামিউল, শান্তনু রায়, সুপারভাইজার ইদ্রিস আলী, সানা উল্লাহ, সিরাজ উদ-দৌলা, রাকিবুল, রাজীব। এছাড়াও সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের দায়িত্বে অবহেলাকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিস্ফোরণের বিধ্বস্ত ওই কারখানার প্লান্টে অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখার অনুমোদন ছিল। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ সেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডারের পাশাপাশি ব্যাপক পরিমাণে মজুত করে রেখেছিল অননুমোদিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন সিলিন্ডার। অনিয়মের এখানেই শেষ নয়, কারখানাটিতে ছিল না অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কারখানা চালুর পর কখনো হয়নি অগ্নিনির্বাপণ মহড়া। পাশাপাশি কারখানাটির লাইসেন্স আছে কিনা তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।
কারখানায় প্রাথমিক তদন্ত কাজ চলাকালীন গাফিলতি ও দায়িত্বে অবহেলার সত্যতা পাওয়া গেছে জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মামলায় অভিযুক্ত তিন মালিকসহ সংশ্লিষ্টরা প্রতিষ্ঠানে যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বিপদজনকভাবে গ্যাস উৎপাদন, ভর্তিসহ সরবরাহ এবং নিয়মিত পরীক্ষা পূর্বক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা না রাখায় এ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ মামলাটি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।