ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় নেমে সরু পথ ধরে আধা কিলোমিটার যেতেই চোখে পড়ে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট। ওই সরু সড়কের দুই পাশে আছে ৮-১০টি স্টিল রি-রোলিং মিল, তেলের রিফাইনারিসহ বেশ কয়েকটি শিল্পকারখানা, আছে বসতবাড়িও।
শনিবার বিকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর এলাকাটি রূপ নিয়েছে ধ্বংসস্তূপে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আশপাশের কারখানা, বসতবাড়ি। বিস্ফোরণ বুকে কাঁপন ধরিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের, এতদিনে এসে তারা অনুধাবন করতে পেরেছেন মৃত্যুঝুঁকির কথা।
এ দিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সোনাইছড়ি ইউনিয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে শিল্পের ব্যবহারের জন্য অক্সিজেন উৎপাদনকারী 'সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে' বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় রাত পর্যন্ত ছয়জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন অন্তত ২০ জন।
রাতের মত উদ্ধার কাজ শেষ করা হয়েছে রাত আটটার দিকে। সকাল থেকে আবার উদ্ধারে নামার কথা জানিয়েছেন আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক।
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, কারখানাটি পুরোপুরি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। লোহার বেড়া আটকে রাখার অ্যাঙ্গেলগুলো পর্যন্ত বেঁকে গেছে।
প্ল্যান্ট প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে সিলিন্ডার, লোহার টুকরো, ভেঙেচুরে একাকার হয়ে যাওয়া তিনটি ট্রাক। কারখানা থেকে ৫০-৬০ গজ দূরে গিয়ে পড়ে রয়েছে লোহার টুকরো। শুধু তাই নয়, প্রায় ৫০০ গজ দূরে ছিটকে পড়া লোহার টুকরোর আঘাতে একজনের প্রাণহানিও হয়েছে।
সীমান অক্সিজেন প্ল্যান্টের ঠিক বিপরীতে স্থানীয় ‘লেদু কন্ট্রাক্টরের’ দোতলা পাকা বাড়ি, ডান পাশে ‘হারুন সাহেবের’ মালিকানাধীন এইচ স্টিল মিল, ৫০ গজ দূরে ‘হারুন সাহেবের’ই আরেক কোম্পানি রুবাইয়া ভেজিটেবল ওয়েল কারখানা।
বিস্ফোরণের ফলে লেদু কন্ট্রাক্টরের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটু দূরে রুবাইয়া তেল কারখানার দোতলা পাকা শেড ক্ষতির মুখে পড়েছে, উড়ে গেছে টিন, স্টিল শিট।
স্থানীয়রা জানালেন, আশপাশের আরও অন্তত ৭-৮টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনার পর সেসব কারখানার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
আধ কিলোমিটার দূরের সাফা স্টিল রি-রোলিং মিলের কর্মচারী অরেশ ত্রিপুরা জানালেন, ঘটনার সময় তিনি নিজের কারখানায় কাজ করছিলেন। বিকট বিস্ফোরণে তাদের অফিসের জানালার কাঁচ, মিটারের কাঁচ ভেঙে গেছে। পুরো কারখানা কেঁপে ওঠে।