প্রয়োজন না হওয়া সত্ত্বেও আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছি অ্যান্টিবায়োটিক। সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই হাতুড়ে ডাক্তারের পরামর্শে কিংবা পরামর্শ ছাড়াই মানুষ সেবন করছে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ।
যার ফলে অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে দেহের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো।
শুধু তাই নয়, ডাক্তারের পরামর্শকে উপেক্ষা করে অ্যান্টিবায়োটিকের পুরো ডোজ শেষ করেন না অনেকে।
যার ফলে শরীরে থেকে যাওয়া ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সৃষ্টি হয় আরও বড় ধরনের রোগের ঝুঁকি। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এমন কিছু নতুন ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করেছেন, যে ব্যাকটেরিয়াগুলো এ ধরনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত গবেষণা মেলায় এ বিষয়গুলো তুলে ধরেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
কথা হয় মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান আতিক ও মনির হোসেনের সঙ্গে। তারা এছাড়া আরও দুটি গবেষণার কথা জানান।
এর মধ্যে একটি হলো বায়ো রেমিডিয়েশন, অন্যটি হলো প্রো-বায়োটিক্স। এ দুটোর ব্যাখ্যা দেওয়ার আগে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স সম্পর্কে আরেকটু জেনে নেওয়া যাক।
অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করেছেন গবেষকরা। বর্তমানে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অধিক হারে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করছে মানুষ। আবার নিজের ইচ্ছেমতো ওষুধ সেবন বন্ধ করে দিচ্ছে। ফলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে। একপর্যায়ে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক আর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে না। পাশাপাশি উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো ধীরে ধীরে কমে আসায় একটা সময় কোনো ওষুধ শরীরে কাজ করে না। এছাড়া শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায় এর ফলে। এ অবস্থায় গবেষকরা আশঙ্কা করছেন ভবিষ্যতে এটি মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।
তাই এমন কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আবিস্কারের চেষ্টা করছেন গবেষকরা, যা শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করার পাশাপাশি উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোর কোনো ক্ষতি করবে না। এগুলো ল্যাকটিক এসিড ব্যাকটেরিয়ার অন্তর্ভুক্ত। যার উৎস পাওয়া গেছে- দই, আখ, দুধ, দুধ থেকে তৈরি ডেইরি প্রোডাক্ট ও মধুসহ বেশকিছু খাবারে। যাকে কাজে লাগিয়ে শরীরের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন গবেষকরা।