জলাভূমি বিপন্ন করে উন্নয়ন টেকসই হবে না

সমকাল সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৩৫

বলা যায়, নদী দিয়ে বাংলাদেশের সৃষ্টি। নদীর পলির ওপর নির্ভর করে ফসলি জমির উর্বরতা। নদীভাঙন ও চর জেগে ওঠার ওপর জনজীবনের প্রভাব রয়েছে। নদীকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া দরকার, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। নদী হচ্ছে জনসম্পদ, কিন্তু এটি কারও কারও কাছে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। দখল-দূষণের পাশাপাশি অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনের কারণে নদীর অস্তিত্ব হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে। ১৬ দশমিক ২ মিলিয়ন কৃষক ফসল আবাদে সেচ নেন নদী থেকে। সেচ নেওয়ার পাশাপাশি কৃষিপণ্য পরিবহনেও নদীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। ৬০ শতাংশ প্রাণিজ আমিষ জোগান দেয় নদীর মাছ। বাণিজ্যিক মৎস্য চাষের চেয়ে প্রাকৃতিক মাছের গুরুত্ব বেশি। যাতায়াত ব্যবস্থায় নৌপথের মতো সহজ ও সস্তা মাধ্যম নেই। কিন্তু অব্যাহতভাবে জলাভূমি হারিয়ে যাওয়ায় নৌপথ সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব জিডিপিতেও পড়ছে।


আমাদের দেশের বড় নদীগুলো বেহাল। প্রতিবেশী দেশ উজানে হওয়ায় ভাটির দেশ হিসেবে পানির ওপর স্বাভাবিক কারণেই আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে বন্যায় প্লাবিত হতে হয়। আবার শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে ফসলি মাঠ ফেটে চৌচির হয়। আমরা এখনও জানি না আমাদের দেশে নদ-নদীর সংখ্যা কত; জলাভূমির সংখ্যা কত; একেক পরিসংখ্যানে একেক রকম তথ্য দেওয়া হচ্ছে। আমরা যদি জলাভূমির সঠিক সংখ্যা বা আয়তনই না জানি তাহলে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরিকল্পনা কীভাবে গ্রহণ করা হবে? সংরক্ষণ থেকে শুরু করে যে কোনো পরিকল্পনা নিতে গেলে সঠিক পরিসংখ্যান দরকার। স্বাধীনতার এত বছর পরও কেন যে জলাভূমির সঠিক সংখ্যা জানতে পারলাম না, তা বোধগম্য নয়।


শিল্পকারখানার অব্যাহত দূষণের ফলে অনেক জলাভূমি হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা যদি ঢাকা শহরের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব- বুড়িগঙ্গা নদীতে ৩৯টি পাইপের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। হাজারীবাগের ট্যানারির বর্জ্য বুড়িগঙ্গা দূষিত করত। এখন সাভারের ট্যানারি পল্লির বর্জ্য ধলেশ্বরীতে যাচ্ছে। তাহলে লাভটা কোথায় হলো? বর্জ্য যদি নদীতেই ফেলতে হয় তাহলে ঢাকা শহর থেকে ট্যানারি শিল্প সরানোর সুফল কোথায় পেলাম? বালুকে এখন আর নদ না বলে বড়সড় ড্রেন বলাই উত্তম। পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকার আশপাশের নদনদীর মধ্যে সবচেয়ে হুমকিতে রয়েছে তুরাগ। ঢাকার আশপাশে বেশ কয়েকটি নদী থাকতে আমাদের সাপ্লাইয়ের পানি আনতে হচ্ছে পদ্মা-মেঘনা থেকে। এতে ওয়াসার অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। অথচ ঢাকার আশপাশের নদীর পানি দিয়ে কম খরচে সাপ্লাইয়ের পানি সংগ্রহ করা যেত। আগেই বলেছি, শিল্পকারখানার কতিপয় মালিক ব্যক্তিস্বার্থে জলাভূমি ধ্বংস করছেন। আমার প্রশ্ন জাগে, তাঁদের ব্যবসার স্বার্থে আমরা সাধারণ মানুষ যে বিসর্জন দিচ্ছি, বিনিময়ে তাঁরা কি আমাদের লাভের ভাগ দেবেন?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us