প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালে। এরপর তা বাড়িয়ে করা হয় ২০২৩ সাল পর্যন্ত। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অথচ খরচ হয়ে গেছে ১১৬ কোটি টাকা। এখন এসে আবার নতুন করে প্রকল্প শুরু করতে চায় সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য নেওয়া হয়েছে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (আরডিপিপি) পাসের উদ্যোগ। এই চিত্র তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়)। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান আধুনিকায়ন এবং আইসিটিভিত্তিক জ্ঞান বিকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের জুনে ‘আইসিটি’র মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় ৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৪০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ, ৪৬ হাজার ৩৪০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ২ হাজার ১২০টি স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ তৈরি, ৬৬৮টি মাল্টিমিডিয়া ট্রেনিং রুম ও কনফারেন্স রুম তৈরি, ৩৩টি সেমিনার আয়োজন করার কথা। কিন্তু প্রকল্প শুরুর সাড়ে ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও অগ্রগতি সামান্যই।
প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১১৬ কোটি টাকা। এই টাকায় কিছু শিক্ষকের প্রশিক্ষণ প্রদান, কয়েকটি সেমিনার আয়োজন এবং কিছু অফিস সরঞ্জাম কেনা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, এখন সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে সবকিছুই (প্রকল্প বাস্তবায়ন) নতুন করে শুরু করা হবে। ফলে আগে খরচ করা টাকার পুরোটাই গচ্চা যাবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মোরশীদুল হাসান বলেন, প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। আগে খরচ করা টাকা পুরোটাই গচ্চা যাবে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এগুলো দেখার দায়িত্ব তো আপনার না। এ ধরনের প্রশ্ন করা কি আপনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে? আমি কেন আপনার সঙ্গে সব কথা বলব?’
আরডিপিপিতে নতুন কী থাকছে?
প্রকল্পটি নতুন করে শুরুর যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ দুটোই বাড়ছে। নতুন প্রস্তাবে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়াতে চায় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ছে ১১৫ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির কার্যবিবরণীতে বলা হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নে অনুমোদিত ব্যয়ের অতিরিক্ত ১১৫ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ টাকায় অত্যাবশ্যকীয় জনবলের বেতন-ভাতা, আউট সোর্সিং ব্যয় এবং মেরামত ও সংরক্ষণ করা হবে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, আপাতত ১১৫ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হলেও এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।