‘পৃথিবী বদলে গেছে যা দেখি নতুন লাগে...’ কিশোর কুমারের গাওয়া এ গানের মতো বাংলাদেশ নাকি বদলে গেছে, যা দেখি নতুন লাগে। সমালোচকদের ধারণা এ দেশে গণতন্ত্র আর বিতর্কের পরিবেশ ক্রমে কুঞ্চিত হয়ে পড়েছে; সংলাপের পথ সরু হয়ে আসছে। অবস্থা অনেকটা হয় তুমি নয় আমি। তবে ‘ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস’ এমনটি নিশ্চিত নন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ ব্যানার্জি ও এস্থার ডুফলো। ২০১৯ সালে তাদের রচিত বই ‘কঠিন সময়ের জন্য ভালো অর্থনীতি’ (Good Economics for Hard Times) বলছে: ‘আমরা বর্তমানে বাস করছি এমন একটা যুগে যখন মেরুকরণ বেড়েই চলেছে। হাঙ্গেরি থেকে ভারত, ফিলিপাইন থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন থেকে ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া থেকে ইতালি সবখানে ডান ও বামের সংলাপগুলো উচ্চতর ধ্বনিসমৃদ্ধ দীর্ঘ পারস্পরিক গালিগালাজ; অব্যাহতভাবে ছোড়া কর্কশ শব্দ অতিক্রান্ত পথ ধরে ফিরে আসার সুযোগ দেয় খুব কম।’ প্রসঙ্গত মনে রাখা দরকার যে বিখ্যাত সেই বইটিই, ক্ষেত্রবিশেষে ভাষান্তরে, বর্তমান নিবন্ধের উৎস।
খোদ মার্কিন মুল্লুকের কথা দিয়ে হারানো দিনের গল্পের শুরু হয়। ওই দেশে যারা কোনো একটা বিশেষ দলের সমর্থক আছেন, তাদের প্রায় ৮০ ভাগ নাকি অন্য দলের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। যেমন ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মনে করেন রিপাবলিকানরা সাম্প্রদায়িক, গোঁড়া এবং যৌনবৈষম্যবাদী। আবার অর্ধেকেরও কিঞ্চিৎ বেশি রিপাবলিকানের বদ্ধমূল বিশ্বাস যে ডেমোক্র্যাটরা বিদ্বেষপূর্ণ। মজার ব্যাপার হলো, সমগ্র মার্কিনদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হতাশ হয় যখন পরিবারের ঘনিষ্ঠ একজন সদস্য অন্যপক্ষের কাউকে বিয়ে করে। সুতরাং, গণতন্ত্র ও বিতর্কের ওপর নির্মিত সভ্যতা, হোক তা ফ্রান্স কিংবা ভারতে এখন যে হুমকির মুখে তা বলাই বাহুল্য।