ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোয় শীত বেশি পড়ে। পাশাপাশি মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থানের কারণে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলও শীতল এলাকা হিসেবে বিবেচিত। প্রায় প্রতিবছরই ওই সব এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে।
কিন্তু ৪০ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ওই তিন এলাকা তো বটেই, দেশের বেশির ভাগ এলাকায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহের প্রকোপ কমছে। কিন্তু মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোয় বাড়ছে। আর ওই ধরনের শীত বেশি পড়ে এমন এলাকার তালিকায় যোগ হয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চুয়াডাঙ্গা ও যশোর এলাকা।
১৯৮১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সারা দেশের তাপমাত্রার ধরনের পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক একটি গবেষণা করেছেন। প্রতিদিনের তাপমাত্রার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তাঁরা দেখিয়েছেন বাংলাদেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের নতুন নতুন এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বাড়ছে। সেই সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলাসহ খুলনা বিভাগের জেলাগুলোয়ও শৈত্যপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ বছরে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ, মৌলভীবাজার এবং যশোর-চুয়াডাঙ্গায় শৈত্যপ্রবাহ সাত দিন করে বাড়ছে। অর্থাৎ ওই জেলাগুলোয় ধারাবাহিকভাবে রাত থেকে ভোরের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকছে। গবেষণার ফলাফলটি গত ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স ডিরেক্ট-এ প্রকাশিত হয়েছে।