গাজীপুরের টঙ্গীর পঁয়ষট্টি-উর্ধ্ব গৃহিণী আকলিমা বেগম (ছদ্মনাম) স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেও তা জানতেন না। যখন তার ক্যান্সার শনাক্ত হলো তখন তা তৃতীয় পর্যায়ে (স্টেজ)। তাকে কয়েকটি কেমোথেরাপি দেয়ার পর অবস্থার অবনতি হয় এবং শনাক্তের ছয় মাসের মাথায় মারা যান। একইভাবে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দেড় বছর আগে মারা যান তার পঞ্চাশোর্ধ্ব বোন রাজিয়া (ছদ্মনাম)। তিনি অবশ্য ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ক্যান্সারের কারণেই তার মৃত্যু হয়।
দেশে শুধু আকলিমা বা তার বোনই নন। গত এক দশকে (২০১০ থেকে ২০২০) দেশে গৃহিণীদের মধ্যে ক্যান্সার বেড়েছে। বছরে শনাক্ত ক্যান্সার রোগীর প্রায় অর্ধেকই গৃহিণী। সাধারণত নারীদের মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্তের হার বেশি। তবে অন্য পেশাজীবীদের চেয়ে গৃহিণীর হার সর্বোচ্চ। অস্বাস্থ্যকর জীবনাচারের ফলে যেসব রোগ প্রভাবিত হয়, সেসব রোগই ক্যান্সারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করছেন ক্যান্সার ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, গত দুই দশকে বৃদ্ধি পেয়েছে নগরায়ণের পরিসর। বেড়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার। মানুষের মধ্যে প্রক্রিয়াজাত ও অতিপ্রক্রিয়াজাত (প্রসেসড ও আল্ট্রা প্রসেসড ফুড) খাবারে নির্ভরশীলতা বেড়েছে। কমেছে কায়িক শ্রম। গৃহিণীদেরও আগের মতো শারীরিক পরিশ্রম করতে হয় না। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতাসহ অসংক্রামক ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগ বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এসব রোগের মধ্যে কোনো কোনোটায় পুরুষের চেয়ে নারী ভুক্তভোগীর হার বেশি।