ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ৪৮ ভবন 'ঝুঁকিপূর্ণ'। এর মধ্যে রয়েছে ৯টি পরিত্যক্ত মার্কেট ভবন; আছে আবাসিক ভবনও। তবু সংস্থা দুটি নড়বড়ে ভবনে মার্কেট ও দোকান খোলা রেখে ব্যবসার সুযোগ করে দিয়েছে। ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের কাছ থেকে করপোরেশন নিয়মিত ভাড়াও আদায় করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ধসে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো উদ্বেগ নেই দুই সিটির।
শুধু তাই নয়, করপোরেশনের তরফ থেকে ওই সব ভবনের ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়, নবায়নও করা হয় পুরোনো লাইসেন্স। অন্যদিকে চিহ্নিত মার্কেট ও আবাসিক ভবনগুলোতে শুধু 'ঝুঁকিপূর্ণ' নোটিশ সাঁটিয়ে দায়িত্ব সেরেছে সিটি করপোরেশন। দুই মেয়রের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করেও তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ আবাসিক ভবনে বসবাসকারী কর্মচারীদের মাসের বেতন থেকে কোয়ার্টার ভাড়া ও ইউটিলিটি বিল ঠিকই কাটছে সংস্থাটি। এমনকি গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও ওই ঝুঁকিপূর্ণ কোয়ার্টারে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিপজ্জনক ভবনের তালিকায় রয়েছে তিনটি কমিউনিটি সেন্টার। সেগুলোও ভাড়া দিয়ে রেখেছে সিটি করপোরেশন। আরেকটি ভবনে চলছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি থানার কার্যক্রম।
জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ২০২০ সালে ৯টি মার্কেট ভবন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩৯টি বাণিজ্যিক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও ভাঙার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ডিএনসিসির রাজস্ব বিভাগ ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তাদের ৯টি মার্কেট ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করে 'ঝুঁকিপূর্ণ' সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়। এর পরও মোহাম্মদপুর টাউন হল পাকা মার্কেটে ১১০টি, মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারের ৪৮৭টি, গুলশান উত্তর কাঁচা মার্কেট ও গুলশান দক্ষিণ পাকা মার্কেটের ২৪২টি, রায়েরবাজার মার্কেটের ৯৭৫টি, কারওয়ান বাজার কাঁচা মার্কেটের (কিচেন মার্কেট) ৮১৪টি, কারওয়ান বাজার ১ নম্বর ভবন মার্কেটের ২৪৬টি, কারওয়ান বাজার ২ নম্বর ভবন মার্কেট থেকে ৩৪০টি ও কারওয়ান বাজার কাঁচামালের আড়ত মার্কেটের ১৭৬টি দোকানে ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছেন। কারওয়ান বাজারের মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায়, ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে আছে। জায়গায় জায়গায় লোহার পাইপ দিয়ে ছাদে ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে।