জ্যোতির্ময়বাবু শিক্ষক ছিলেন আমার, যেমন তারও কিছু আগে শিক্ষক ছিলেন তিনি রাশীদুল হাসানের। জীবন ও সাহিত্য সম্পর্কে আমার অনেক ধারণাই তাঁর কাছ থেকে পাওয়া। আমি যতটা জানি তারও চেয়ে বেশি আমার ঋণ। জ্যোতির্ময় স্যার অসংশোধনীয়রূপে যুক্তিবাদী ছিলেন, বিষয়কে তিনি বিশ্লেষণ করে দেখতে চাইতেন তার মূল্য নির্ধারণের আগে।
মানতেই হবে যে জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ও রাশীদুল হাসানের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান ছিল। বয়সে, অভ্যাসে, রুচিতে যতটা না মিল ছিল, গরমিল ছিল তার চেয়েও বেশি। অন্তত বাহ্যত তো তা-ই মনে হতো। যদিও তাঁরা দুজনই ছাত্র ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের, সহকর্মী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে।
কিন্তু তাঁরা কাছাকাছি, খুব কাছাকাছি ছিলেন বিনয়ে; আরও কাছে ছিলেন একে অপরের দেশের প্রতি ভালোবাসায়। সামান্যতার সাধারণ পরিবেশে তাঁরা অসামান্য হয়ে উঠেছিলেন ওই দুই আপাতসাধারণ, কিন্তু বস্তুত-দুর্লভ গুণে।