জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর একাধিক ভাষণে স্বাধীনতার জন্য নিঃস্বার্থ প্রাণ উৎসর্গকারীদের মধ্যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের কথা উল্লেখ করেছেন। আসলে ৫১ বছর যাবৎ এই অত্যন্ত সংবেদনশীল দিনটি বাংলাদেশ তথা বিশ্ববাসীকে আলোড়িত করে চলেছে। ২০২২ সালেও আমরা স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নির্মম মৃত্যুর করতলে প্রাণ দিয়ে আজও যাঁরা দিশারি তাঁদের অবদানকে। বুদ্ধিজীবীদের আদি পিতা সক্রেটিসের মৃত্যু ছিল নিষ্ঠুর, নির্মমতার মানদণ্ডে নিকৃষ্ট। যদিও তখন আধুনিক বিশ্বের মতো মধ্যবিত্ত শ্রেণি কিংবা বুদ্ধিজীবীদের সংজ্ঞা তৈরি হয়নি। তবু তিনি ছিলেন মানুষের মুক্তির দিশারি। নতুন চিন্তা আর ন্যায়ের পূজারি।
জীবনাভিজ্ঞতা নিংড়ে যুক্তিবাদিতায় প্রভাবশালী হয়ে ওঠা এই দার্শনিক আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩৯৯ অব্দে হেমলক পান করে মৃত্যুদণ্ডকে মেনে নিয়েছিলেন। সক্রেটিসের পর যিশু খ্রিস্টের ক্রুশবিদ্ধ হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য ছিল নতুন ধর্মাদর্শ ও জীবনাদর্শের প্রতি চরম চপেটাঘাত। কারণ তিনিও মানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। মানবতার কথা ছিল তাঁর মুক্তির প্রধান সোপান। তারপর রাজতন্ত্রের সহস্র বছরের ইতিহাসে মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রার অগ্রণী গ্যালিলিওসহ অনেক বিজ্ঞানীকে গিলোটিনে হত্যা করা হয়েছে। রেনেসাঁস, শিল্পবিপ্লব আর ফরাসি বিপ্লব আধুনিক মানবসভ্যতার বিকাশকে ত্বরান্বিত করেছিল নিঃসন্দেহে। কিন্তু তখনো রাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যক্তির দ্বন্দ্ব নিরসন হয়নি।