বাংলা থিয়েটারের দেড়শো বছর

দেশ রূপান্তর সৌমিত্র দস্তিদার প্রকাশিত: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৫৯

নিয়মিত কলাম লেখার একটা সমস্যা আছে। চাপা উত্তেজনা কাজ করে, কী লিখব না লিখব তাই নিয়ে। এখন ফুটবল নিয়ে সারা বিশ্ব টগবগ করে ফুটছে। একবার মনে হলো এই নিয়েই লিখি। কিন্তু হঠাৎই মনে পড়ে গেল বাংলা থিয়েটারের দেড়শো বছর নিয়ে লেখাটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিশেষ করে আমরা যারা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা, তাদের কাছে তো বাংলা ভাষা শিল্প-সাহিত্য দিনকে দিন যেভাবে কোণঠাসা হচ্ছে, সেখানে নাটকের দেড়শো বছর চর্চা জরুরি।


কলকাতা শহর গড়ে তোলার পেছনে বিদেশিদের ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না। সুতানুটি, কলকাতা ও গোবিন্দপুর তিনটে গ্রাম থেকে নগরায়ণের সূচনা নিশ্চিত ইংরেজ বণিকদের হাত ধরে। তবে এই শহরের নিজস্ব আইডেন্টিটি গড়ে ওঠার পেছনে পর্তুগিজ, আর্মেনীয়, ফরাসি, এমনকি রাশিয়ানদের ভূমিকাও কিছু কম ছিল না। রুশ নাগরিক লেবেদেফের উদ্যোগেই জন্ম নিয়েছিল প্রথম পেশাদার রঙ্গমঞ্চ। এখনকার কলকাতার এজরা স্ট্রিটে ১৭৯৫ সালের ২৫ নভেম্বর তখনকার ডোম তলার জগন্নাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাসা ভাড়া নিয়ে লেবেদেফ সাহেব জন্ম দিয়েছিলেন ‘বেঙ্গলি থিয়েটার’-এর। তিনশো আসনের এই হলে লোকে টিকিট কেটে নাটক দেখেছিলেন। তবে দুটি মাত্র শো-এর পরে বন্ধ হয়ে যায় প্রথম পেশাদার রঙ্গমঞ্চ। বলা হয় আগুন লেগে পুড়ে গিয়েছিল পুরো হলটি। ওই ধাক্কা সাহেব আর সামলাতে না পেরে সব বন্ধ করে দেশে ফিরে যান বাধ্য হয়ে। কেউ কেউ আবার মনে করেন ইংরেজরা জোর করে বন্ধ করে দেয় থিয়েটার হলটি। লেবেদেফকে নানাভাবে হেনস্তা করে রাশিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।


কিন্তু প্রশ্ন উঠবে কী কী কারণ থাকতে পারে থিয়েটার বন্ধ করার! হতে পারে নব্য বেনিয়া ইংরেজরা অন্য কোনো বিদেশির ভালো কাজ মানতে পারেনি। হতে পারে থিয়েটারের মধ্য দিয়ে সাধারণ লোক যদি শিক্ষিত, সচেতন হন তা মোটেও পছন্দ ছিল না ইংরেজদের। যাই হোক, অজ্ঞাত কারণে অল্প দিনের মধ্যেই লেবেদেফ সাহেবের যাবতীয় কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে গেল। তবুও এটা ঠিক যে ইতিহাস থেকে কোনোদিনই তিনি মুছে গেলেন না। বাংলাদেশের হায়াৎ মামুদের চমৎকার এক গবেষণা গ্রন্থ আছে লেবেদেফ নিয়ে।


আমরা বড় হওয়ার পর থেকে তিন ধারার নাটক সম্পর্কে শুনেছি। পেশাদার থিয়েটার। গ্রুপ থিয়েটার। আর বাদল সরকারের থার্ড থিয়েটার। এখন আরও নতুন নতুন ইনটিমেট বা ঘনিষ্ঠ আরও কত শব্দ শুনছি। একটা সময় ছিল যখন কফি হাউজে আমাদের চর্চার বিষয় ছিল স্তানিসøাভস্কির নাটক বনাম ব্রেখটীয় ধারা। পরে, যখন বেশ বাম রাজনীতির মিছিল-মিটিংয়ে সক্রিয়, তখন ব্রাজিলের অগুস্ত বেবেল বা গ্রটভস্কি আমাদের আলোড়িত করেছে। তারও অনেক আগে নবনাট্ট, গণনাট্য এসব তো ছিলই। হাতী বাগান পাড়ার বাণিজ্যিক থিয়েটার নিয়ে আমাদের বেশ একটা নাক উঁচু ভাব ছিল। ঘোর ক্যাপিটালিজম-বিরোধী আমরা কীভাবে পয়সা লগ্নির নাটককে মেনে নেব! তারপর সত্তর দশকে কলকাতা যখন অগ্নিগর্ভ, দেয়ালে দেয়ালে চীনের চেয়ারম্যানকে আমাদের চেয়ারম্যান বলে সত্তর দশককে মুক্তির দশক হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তখন ওই সব পেশাদার মঞ্চে ক্যাবারে নাচ সংযোজিত হচ্ছে। রাজা বাজারের প্রতাপ মেমোরিয়াল হলে বারবধূ নাটকে মিস শেফালীর নাচ চলাকালীন একবার বোধহয় কে বা কারা বোমাও ফেলেছিল। মোদ্দা কথা হাতী বাগান পাড়ার নাটক ছিল আমাদের মতো আদর্শবাদী কিশোর তরুণদের কাছে বিষবৎ পরিত্যাজ্য।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us