মামলা হয় প্রতিনিয়ত। ক্ষতিপূরণের দাবিতে টাকার অঙ্ক লেখা হয় ২ হাজার কোটি টাকা কিংবা তারও বেশি। বিবাদী, আসামির উদ্দেশ্যে সমনের তামিল প্রতিবেদন যেমন আসে না, তেমনি অভিযোগ গঠনের তারিখ পড়ে বছরের পর বছর। মামলার প্রথম তারিখে শুনানি ও হাজিরার পর বাদী, সাক্ষীর খোঁজ মেলে না। মামলা করে বাদী ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন এমন নজিরও নেই। সব মিলিয়ে মানহানির মামলার ‘মান’ থাকছে কি না, কেন মামলা হয়, মামলার ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত এসব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৪৯৯ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করতে কেউ নিন্দাবাদ প্রণয়ন ও প্রকাশ করলে তাই মানহানি। এ অভিযোগে দন্ডবিধি (পেনাল কোড) ও দেওয়ানি কার্যবিধির বিধান মেনে টর্ট আইনের আলোকে মানহানির জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করা যায়। তবে এসব আইনে ক্ষতিগ্রস্ত দাবি করা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মান ও মর্যাদা নির্ধারণ করে অর্থমূল্য নিয়ে কিছুই বলা নেই। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা নিজেরাই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদার ওপর ধারণার ভিত্তিতে নথিতে অর্থমূল্য লিখে দেন।
দন্ডবিধির ৫০০ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে কারও মানহানি প্রমাণিত হলে, ৫০১ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির মানহানিকর কোনো বিষয় মুদ্রণ (ছাপা) করলে এবং ৫০২ ধারা অনুযায়ী কারও জন্য মানহানিকর বিষয় সংবলিত কোনো দ্রব্য বিক্রি করলে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড হবে। আর মানহানির অভিযোগে ক্ষতিপূরণ দাবি করা ব্যক্তির মামলা নিষ্পত্তি হবে দেওয়ানি আদালতে। ক্ষতিপূরণ ও দন্ডবিধির উভয় মামলা জামিনযোগ্য। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৮ ধারা অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত দাবি করা ব্যক্তি ছাড়া আদালত মামলা আমলে নেবে না। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি নারী হলে এবং বিশেষ কিছু শর্তে অন্য কেউ মামলা করতে পারেন।