রোগশোক থেকে দূরে থাকতে কে না চায়—এ কথা যে–ই বলে থাকুক, তাঁকে আর বিশ্বাস করা যাবে না। দেশে এখন এমন এলাকাও আবিষ্কৃত হয়েছে, যেখানে লোকজন লাইন ধরে ‘রোগী’ হতে এগিয়ে আসে। শুধু দরকার ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের একটা ইশারার।
ক্যানসার, কিডনির জটিলতা, লিভার সিরোসিস, জন্মগত হৃদ্রোগ—যেভাবে ‘অর্ডার’ আসছে সেভাবেই রোগী হয়ে (সেজে) যাচ্ছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার কিছু লোক। নিজেকে ‘রোগী’ প্রমাণের সব কাগজও (জাল) তাঁদের সংগ্রহে থাকে। শুধু রোগের ধরন বুঝে কী ধরনের আচরণ করতে হয়, সেটি তাঁরা পুরোপুরি করতে পারছেন না ফেসবুক বা ইউটিউবে এখনো এ–জাতীয় টিউটোরিয়াল (ভিডিও প্রশিক্ষণ) খুঁজে না পাওয়ায়।
‘যৎসামান্য’ সরকারি আর্থিক সহায়তা নিতে ভুয়া রোগী যাঁরা সেজেছেন, তাঁদের কতটা দোষ দেওয়া যাবে, সেটি এখন প্রশ্নসাপেক্ষ। কারণ, অনেকের মত হচ্ছে, দেশে যদি গায়েবি মামলা হতে পারে, তাহলে রোগী ভুয়া হলে সমস্যা কী! একেবারে ‘অকাট্য’ না হলেও এই যুক্তি হেলাফেলা করার মতো নয়।
৩০ নভেম্বর প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘সমাজকল্যাণমন্ত্রীর এলাকা: ভুয়া রোগী বানিয়ে অর্থ আত্মসাতে মন্ত্রীঘনিষ্ঠরা’। কালীগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি গ্রাম ও আদিতমারী উপজেলার তিনটি গ্রামে অনুসন্ধান করে ২৪৫ জন ভুয়া রোগীর খোঁজ পেয়েছে প্রথম আলো। এই দুই উপজেলা সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের নির্বাচনী এলাকা। ২০১৯ সালে তিনি সমাজকল্যাণমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে কালীগঞ্জ ও আদিতমারীতে ক্যানসার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদ্রোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে।