২৯ জুন ১৯৫৮। স্টকহোমের কাছে সোলনার রাসুন্দা স্টেডিয়ামে ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনাল। ব্রাজিল বনাম সুইডেন। দুদলের জার্সি হলুদ রঙের। রঙ বদলাবে কোন দল টসে নির্ধারিত হবে, কিন্তু ব্রাজিল টসে অংশ নিল না। ওয়াক ওভার পেয়ে গেল সুইডেন। বদলাতে হবে তাদেরই। ব্রাজিলের বিকল্প ছিল সাদা জার্সি, কিন্তু ১৯৫০-এ সাদা জার্সি পরে ফাইনালে উরুগুয়ের কাছে হেরেছে বলে এটাও এড়াতে চাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত দলের একজন কর্মকর্তা ২২টি নীল রঙের টি-শার্ট কিনে এনে তাতে ব্রাজিলের প্রতীক লাগালেন।
বিশ্বকাপ খেলতে ব্রাজিল ছেড়ে সুইডেন আসাএটাই পেলের জীবনের প্রথম উড়োজাহাজে চড়া। ১৯৫৮ সালেই শক্তিশালী নতুন দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বকাপে যোগ দেয়। দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে বেশি দূর এগোতে পারল না, বাদ হয়ে গেল ইতালি।
ব্রাজিল দলে যুক্ত হলে কী হবে পেলেকে প্রথম দুটো ম্যাচে নেওয়াই হলো না১৭ বছরের ছেলে কী খেলবে! আবার হাঁটুতেও আঘাত ছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে অবশ্য তাকে নামানো হয় এবং ওয়েলসের বিরুদ্ধে জয়সূচক গোলটি পেলেই করেন। তাতেই বিশ্বরেকর্ডএত কম বয়সী কেউ বিশ^কাপে গোল করতে পারেননি। সেমিফাইনালে শক্তিশালী ইউরোপীয় দল ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করার পর পৃথিবী পেলের নাম জেনে যায়। পেলে এবং ব্রাজিল সমার্থক হয়ে ওঠে। সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বকাপের হ্যাটট্রিকের অধিকারীও পেলে।
বিশ্বকাপের ফাইনালে পেলে সুইডেনের জালে একটি বল ঢুকিয়েছেন সত্য, কিন্তু আরও দুটি গোল তৈরি করে দেওয়ার কৃতিত্বও তারই।
সেবার বিশ্বকাপ ফাইনালের আরও দুটি রেকর্ডের একটি অবশ্যই পেলের সবচেয়ে কম বয়সে (১৭ বছর ২৪৯ দিন) ফাইনালে গোল দেওয়া, একই খেলায় সবচেয়ে বেশি বয়সে গোল দেওয়ার রেকর্ডটিও হয়েছে। ৩৫ বছর ২৬৩ দিন বয়সী সুইডিশ নিলস লিডহোম ব্রাজিলের বিরুদ্ধে গোল দিয়ে এই রেকর্ডের অধিকারী হন। ১৯৫৮-এর বিশ্বকাপ ফুটবলের পর রাজা একজনইপেলে দ্য কিং।