বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে না। এই আশ্বাস আমাদের অর্থনীতিবিদেরা দিয়ে এসেছেন। এর কারণ, তাঁরা বলতেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার সিন্দুক যথেষ্ট সবল। আর বাংলাদেশ তো চীন থেকে ঋণ নিয়ে ঘি খায়নি, মানে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প করেনি। তারপর বুড়িগঙ্গায় অনেক জলই গড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের ডলার হয়ে পড়েছে আক্রা। তবে নীতিনির্ধারকেরা আগেভাগে সতর্ক হয়েছেন। তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রকে বিশ্রাম দিয়ে লোডশেডিং করেছেন, যাতে তেল কম করে আমদানি করতে হয়, এলসি খোলাকে নিরুৎসাহিত করেছেন।
তাতে নাকি ডলার বেশ কিছু পরিমাণে সাশ্রয় হয়েছে। জানুয়ারি ২০২৩ নাগাদ রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় থেকেই আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে বলে কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ মনে করছেন।
জরুরি প্রকল্প ছাড়া কম জরুরি প্রকল্পে ব্যয় করা থেকে বিরত থাকার নীতি নেওয়া হয়েছে। এটা তো সব সময়ই কাম্য ছিল। একই নদীতে পাশাপাশি তিনটা অর্ধসমাপ্ত সেতু রাজনৈতিক কারণে আধা খাড়া করে রাখার যে ছবি আমরা দেখি, তা আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত করে। অন্য যে প্রশ্নটা আসে, তা হলো অনেক আমদানির সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জড়িত, বহু লোকের কর্মসংস্থান হয়। ধরা যাক, যদি নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়, লাখ লাখ নির্মাণশ্রমিক বেকার হয়ে যাবেন। শুধু কৃষি দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হবে না। অমর্ত্য সেন বলেছেন, খাদ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ হয় না; দুর্ভিক্ষ হয় ক্রয়ক্ষমতার অভাবে, আর খাদ্যের বিতরণব্যবস্থার ত্রুটির কারণে। যে অঞ্চলে খাদ্যাভাব, সেখানে খাবার পৌঁছাতে হবে। আমাদের সেফটি নেট অবশ্য এখন পর্যন্ত ভালো বলেই প্রমাণিত হয়ে এসেছে।