বীরূপাক্ষ পাল। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কোর্টল্যান্ডের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন। এক সময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ছিলেন। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে টেলিফোনে সমকালের সঙ্গে বাংলাদেশের বেকারত্ব নিয়ে কথা বলেছেন।
বীরূপাক্ষ পাল : জনসংখ্যা একটি বড় সমস্যা। তবে বেশি হয়ে গেলে আপনি ফেলে দিতে পারবেন না। জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে সর্বোচ্চ সুফল ঘরে তোলা যায়, সেটা করতে হবে। এদিক থেকে বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের মধ্যে আছে। এই ডিভিডেন্ড বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারছে না। সঠিক পরিকল্পনা না থাকার কারণে বাংলাদেশ এই সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করছে।
সরকারকে যথোপযুক্ত পরিকল্পনা নিতে হবে। সেই সঙ্গে বেকার তরুণ-তরুণীদের শুধু সরকারি এবং প্রাইভেট চাকরির দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় তরুণদের অনেকগুলো মূল্যবান বছর নষ্ট করে দেয়। এরপর অনার্স-মাস্টার্স পাস করে তারা শুধু চাকরি খোঁজে। তাদের মাথায় শুধু বিসিএস- প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস ইত্যাদি। এটা একটা বিকৃতি, এ থেকে বের হতে হবে। পৃথিবীর সব উন্নত দেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডকে সঠিক উপায়ে কাজে লাগিয়েছে। বাংলাদেশকেও সেটা করতে হবে। এর বিকল্প নেই।
বেকার সমস্যা সমাধানে সবার আগে প্রয়োজন বেকারের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা। বাংলাদেশে বেকারের যে সংজ্ঞা নির্ধারিত সে অনুযায়ী, দেশে কর্মক্ষম যুবকদের মধ্যে ৪ থেকে ৫ শতাংশ বেকার আছে। যেটা সুইজারল্যান্ড, আমেরিকায় দেখা যায়। প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশে বেকার হবে ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ। তথ্য ব্যবস্থাপনার এই বিকৃতি বন্ধ করতে হবে। ভারতের তথ্য ব্যবস্থাপনা অনেক স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়। তবে আমাদের দেশে সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পরিপূরক হিসেবে কাজে লাগানো হয়। এটি শুধু আমার কথা নয়, বড় বড় পণ্ডিতরাও এই অভিযোগ করেন।