বিশ্বের বড় অর্থনীতির ১৯টি দেশ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সমন্বয়ে গঠিত জি-২০ এর শীর্ষ সম্মেলন গতকাল শুরু হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার অবকাশকেন্দ্র বালিতে। এবারের সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। সম্মেলনের আগে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বিশ্ব এবং তার অঞ্চল বহুমুখী সংকটে রয়েছে। এ অবস্থায় জি-২০ নেতারা বিশ্বকে কোন পথ দেখাবে বা আদৌ পথ দেখাতে পারবে কিনা সেটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তার ভাষায়, সংকটগুলো হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনা, বিশ্ববাজারে মুদ্রাস্ফীতির দৌরাত্ম্য, কোভিড সংক্রমণ থেকে ধরে দীর্ঘ আর্থিক মন্দা, উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা। এবারের সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন সরাসরি অংশ নিচ্ছেন না, তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের নেতা শি জিনপিংয়ের সরাসরি সাক্ষাৎ হবে এবং তারা একান্ত বৈঠকেও বসবেন।
জি-২০ ফোরামে শিল্পোন্নত বড় অর্থনীতির দেশ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, ভারত বা আর্জেন্টিনার মতো বিকাশমান অর্থনীতির দেশও শরিক রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলকে তারা প্রতিনিধিত্ব করছে। এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো মোট বৈশ্বিক উৎপাদনের ৮০ শতাংশ, বিশ্ব বাণিজ্যের ৬০-৭৭ শতাংশ, বিশ্বের জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ এবং বিশ্বের আয়তনের ৬০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। সেদিক থেকে এ সংস্থার পক্ষে সংকটকালে এবং সংকট মোচনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন সম্ভব। তবে আমরা দেখছি এর প্রভাবশালী সদস্য রাষ্ট্রগুলোই পরস্পর স্বার্থের দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বৈশ্বিক সংকটেও তারা একযোগে ভূমিকা রাখতে পারছে না। ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো যে ইস্যু বিশ্ব ও বিশ্বের মানুষের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলেছে তার সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা যেমন নিতে পারছে না, তেমনি বিভিন্ন জলবায়ু সম্মেলনে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিও রক্ষিত হচ্ছে না। ফলে বিশ্ব আজ বহুমুখী সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে।