ঢাকা শহরের প্রায় অর্ধেক মানুষের বাস বস্তিতে, যেখানে অর্ধশতের জন্য একটি টয়লেটও নেই। ফলে খোলা স্থানেও হয় মল-মূত্র ত্যাগ, তাতে স্বাস্থ্যুঝুঁকি বাড়ছেই।
কখনও ভিক্ষা করে, কখনও কাগজ-প্লাস্টিক কুড়িয়ে জীবন কাটছে হাসনা বেগমের। সন্ধ্যা নামলে মাথা গোঁজেন ফুটপাত কিংবা ফুটব্রিজে। তাহলে টয়লেট সারেন কোথায়? প্রশ্ন শুনেই মাথা নিচু করে মুখ ঢাকলেন। বললেন, “দিনে পানিটানি কম খাই, না যাওনের লাইগ্যা। রাইতে আড়াল পাইলে ড্রেইনের দিকে যাই।”
হাসনার মতো ঢাকায় থাকা ছিন্নমূলদের নিয়ে করা এক গবেষণা ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল ‘জার্নাল অব ওয়াটার অ্যান্ড হেলথ’ এ। তাতে বলা হয়, খুব অল্প সংখ্যক ছিন্নমূল মানুষ পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করে থাকে। কারণ প্রতিবার টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়ে তাদের ৫-১০ টাকা খরচ করতে হয়। যার ফলে তাদের বেশিরভাগই খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করছেন।
কিন্তু এই শহরেই আরেক দল মানুষ আছেন, যাদের থাকার জন্য একটি ঘর হলেও রয়েছে, স্বাস্থ্যসম্মত না হলেও টয়লেট রয়েছে, যদিও তা ব্যবহারের সুবিধা খুবই অপ্রতুল।
তাদের একজন রিকশাচালক আনোয়ার হোসেন, চারজনের পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন কড়াইল বস্তির এক খুপরি ঘরে। আনোয়ারের ওই বাসায় এমন ঘরের সংখ্যা ১০টি। সেখানে থাকেন সাত পরিবারের ২২ সদস্য। তাদের সবার জন্য শৌচাগার মাত্র একটি।
আনোয়ার বললেন, “সকালে সিরিয়ালে থাকন লাগে। কষ্ট অয় অনেক। কিছু করণের নাই। মানাইয়া লইছি।”
২০২০ সালে ওয়াটার ইন্টারন্যাশনাল সাময়িকীতে প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংক পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার বিভিন্ন বস্তিতে ৯০ শতাংশ পরিবারকেই যৌথভাবে শৌচাগার ব্যবহার করতে হয়, যেখানে একটি শৌচাগার ব্যবহার করে গড়ে ১৬ পরিবার।