বার্ট্রান্ড রাসেলের নামে প্রচলিত একটি উদ্ধৃতি হলো, ‘ন্যায়ের পক্ষে কে, তা দিয়ে যুদ্ধের জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় না। কে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে, তা দিয়েই সেটা নির্ধারিত হয়।’ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানে যে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছিল, তাতে কে ন্যায়ের পক্ষে ছিল, সেটা নির্ধারিত হয়নি। কিন্তু এ ঘটনা পুরো মানবজাতির ওপর একটা কলঙ্কের ছায়া ফেলে গেছে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আংশিক সেনা সমাবেশের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি রাশিয়া রক্ষার ক্ষেত্রে সব উপায় ব্যবহারের শপথ নেন। নতুন ভূখণ্ড রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার অঙ্গীকার করেন। এর মধ্য দিয়ে সাত মাস বয়সী যুদ্ধের তীব্রতা নতুন মাত্রায় পৌঁছায়। আংশিক সেনা সমাবেশের অর্থ হচ্ছে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জরুরি ভিত্তিতে সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ করা। এ উদ্যোগকে পুতিন বলেছেন, ‘রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষায় জরুরি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।’ পুতিন বলেছেন, রাশিয়া ন্যাটোর পুরো শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছে। পশ্চিমারা পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুতে ব্ল্যাকমেল করছে—এমন দাবি করে পুতিন বলেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার ক্ষেত্রে যদি বিন্দুমাত্র হুমকি তৈরি করা হয়, তাহলে সেটার ফয়সালা করতে নিজেদের সব ধরনের শক্তি ব্যবহারে পিছপা হবে না মস্কো।
পুতিনের এ বক্তব্যের পর বেশ কিছু দেশ খুব দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চীনের বিবৃতি। পুতিনের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বেইজিং বিবৃতিতে ‘সংলাপের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানায়। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর শক্তভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে চীনের পক্ষ থেকে এটাই প্রথম ও প্রকাশ্য বিবৃতি।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই শোইগুকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করা হলে সেটা শুধু এক পক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। নয়াদিল্লি এর আগে রাশিয়ার প্রতি নিরপেক্ষতার নীতি বজায় রেখে আসছিল।