কিছুদিন আগে লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক পার্টির এক রিসেপশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পাকিস্তানকে বিশ্বের ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলোর মধ্যে একটি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। কোনো সমন্বয় ছাড়া পারমাণবিক অস্ত্র ধারণ করার পরিপ্রেক্ষিতে যদিও তিনি কথাটি বলেছেন, হয়তো ওই বক্তব্যের অভ্যন্তরে আরো অনেক অজানা সত্য লুকানো আছে। বাইডেন সাহেব দয়া করে যদি পাকিস্তানের অতীত ইতিহাস একটু গভীরভাবে ঘেঁটে দেখতেন, তাহলে বুঝতে সক্ষম হতেন যে পাকিস্তানকে চিনতে অনেকটাই দেরি করে ফেলেছিলেন তাঁর পূর্বসূরিরা। অবাক লাগে যে পাকিস্তানকে চিনতে যুক্তরাষ্ট্রের মতো মহাশক্তিশালী একটি দেশকে ৫০ বছরেরও বেশি অপেক্ষা করতে হলো।
অথচ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ বিপজ্জনক পাকিস্তানকে স্পষ্টভাবে চিনতে পেরেছিল ১৯৭১ সালে। যাই হোক, এত বছর পরে হলেও শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র যে পাকিস্তানের আসল চেহারা দেখতে পেয়েছে, সেটিই অনেক বড় কথা। তবে সামান্য হলেও মনের ভেতর যে সন্দেহ রয়েই যায়, তা হলো যুক্তরাষ্ট্র কি আসলেই পাকিস্তানকে ওই রকম দেশ মনে করে, নাকি এ কথার মধ্যে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে?
তথ্য মতে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন সেদিন বিদ্যমান আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে চীন ও রাশিয়া সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলার সময় পাকিস্তানের ওপর ওই মন্তব্য করেন। চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চীন ও রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছে। চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই। আবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও পাকিস্তানের একই উচ্চতার সম্পর্ক ছিল। তবে ২০১০ সালের পরে রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক যেভাবে গভীর হতে থাকে তাতে মার্কিন নেতৃত্বে পাকিস্তানকে নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। অনেকের মতে, তার ফলে পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পদত্যাগ করতে হয়। তাই চীনকে ভর করে রাশিয়ার সঙ্গে আবার কোনো চোরাগলিতে পাকিস্তান পা বাড়ায় কি না সেই সন্দেহ থাকাটাই স্বাভাবিক। যাই হোক, পাকিস্তানের বর্তমান সরকার ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে এরই মধ্যে ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে।