দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়িয়া চলিয়াছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য উদ্ৃব্দত করিয়া শনিবার সমকালের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হইয়াছে- বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা হইতে শুক্রবার সকাল ৮টা অবধি দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ২৮০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হইয়াছে। ইহার ফলে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৯১৬ জনে দাঁড়াইয়াছে। তবে যে বিষয়টি আমাদের আরও বেশি উদ্বেগ বাড়াইয়াছে তাহা হইল, এইবার শিশুদের এই প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্তের সংখ্যা একটু বেশিই দেখা যাইতেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, শুক্রবার পর্যন্ত দেশে যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হইয়াছে, তাহাদের মধ্যে ৩৭ শতাংশই শিশু। কে না জানে, প্রাপ্তবয়স্কদের চাইতে শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে। ফলে একেবারে শুরুতেই সতর্ক না হইলে শিশুদের এই রোগে কাবু হইয়া যাওয়ার শঙ্কা বেশি। সেই কারণেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিবেশিত তথ্যে দেখা গিয়াছে, গত ৯ মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুতে যে ৫৫ জন মৃত্যুবরণ করিয়াছে, তাহাদের মধ্যে ১৪ জনই শিশু; অর্থাৎ চলতি বৎসর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ২৫ শতাংশই শিশু। সাধারণত এপ্রিল হইতে অক্টোবর পর্যন্ত এই রোগের মৌসুম সাব্যস্ত হইলেও সেপ্টেম্বরেই তাহার তীব্রতা কমিয়া যাওয়ার কথা। কিন্তু এই বৎসর তাহার কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হইতেছে না। এইবারের বর্ষায় বৃষ্টি একটানা হওয়ার চাইতে থামিয়া থামিয়া হওয়ার কারণে স্বচ্ছ পানি বেশি সময় ধরিয়া জমিয়া থাকার সুযোগ পাইয়াছে। এই ধরনের পরিবেশ ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার বংশবিস্তারের সহায়ক বলিয়া ধরা হয়। এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা বলিয়াছেন, অক্টোবরেও ডেঙ্গুর উৎপাত হ্রাসের সম্ভাবনা কম। আমাদের বিচলিত হইবার কারণ হইল, এখনই যদি এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয় তাহা হইলে আরও অনেক মায়ের কোল অকালে খালি হইবার আশঙ্কা থাকিয়া যায়।