সংস্কৃতে একটি শ্লোক শুনেছিলাম দাদার কাছে, এতে বলা হয়েছিল কোন কোন ধরনের মানুষকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। এরমধ্যে আছেন রোগী, বরযাত্রী ও সম্মানিত জন অর্থাৎ ভিআইপিদের। সেই শ্লোক চালু হওয়ার শত শত বছর পরে এসে আমরা দেখতে পারছি শুধু ভিআইপিরাই এখন এই স্থবির ঢাকা শহরে চলাচলের রাস্তা পাচ্ছেন, বাকিরা সবাই ফুক্কা।
যানজটে দাঁড়িয়ে যখন এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দ কানে আসে, তখন মনেহয় আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জানি এই অনুভূতি সবারই হয়। সাথে সাথে মনেহয় এই এ্যাম্বুলেন্সটাতে তো আমার সন্তান, মা, বাবা, প্রতিবেশি বা বন্ধু যে কেউ থাকতে পারতো, যাকে এখুনি হাসপাতালে নিতে হবে। অথচ নিতে পারছিনা, দাঁড়িয়ে আছি পথের মাঝখানে। এরকম সাইরেন শুনলে ডানে তাকাই, বাঁয়ে তাকাই, দেখার চেষ্টা করি কোথাও কোন পথ আছে কিনা। নাহ পুরো রাস্তা অবরুদ্ধ। তখন রোগীর ভাগ্য আল্লাহর উপরেই ছেড়ে দিয়ে চুপ করে থাকি। মনে মনে বলি "রাখে আল্লাহ মারে কে"।
একই অবস্থা ফায়ার ব্রিগেড বা দমকল বাহিনীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বহুবছর আগে বিদেশে বেড়াতে গিয়ে দেখেছিলাম ফুটপাতের উপর দিয়ে ফায়ার এলার্ম বাজিয়ে দমকল বাহিনীর গাড়ি ছুটে যাচ্ছে আগুন নেভানোর জন্য। খুব অবাকও হয়েছিলাম এইভাবে সবকিছু উপেক্ষা করে দমকল বাহিনীকে ছুটে যেতে দেখে। সেই ফুটপাতগুলোর উচ্চতা রাস্তা লাগোয়া হওয়ায়, ফুটপাতে কোন দোকান বা হকার না থাকায়, ইট-বালু, সুড়কি না থাকায় দমকল বাহিনীর গাড়ি উঠে যেতে পেরেছিল।