আমার প্রজন্মের নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রকে আইকন হিসেবে বিবেচনায় করত। নব্বই দশকের শেষের দিকে আমি যখন উত্তর-পশ্চিম চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম, তখন আমি ও আমার বন্ধুরা নিয়মিত ভয়েস অব আমেরিকার অনুষ্ঠানগুলো শুনতাম। এটি আমাদের ইংরেজি দক্ষতা বাড়িয়ে তুলতে বড় ভূমিকা রেখেছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাম্প্রতিক অবস্থা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতাম। আমাদের ক্যাম্পাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো ভিজিটিং প্রফেসর আসলে আমরা সবাই মিলে আগ্রহভরে তার বক্তৃতা শুনতে যেতাম।
তখন সময়টা ছিল বেশ রোমাঞ্চকর। চীন তখন বিচ্ছিন্নতাবাদ ও দারিদ্র্য থেকে বের হতে শুরু করেছে। আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে গণতন্ত্র, বাজার অর্থনীতি, অসমতাসহ অন্যান্য আদর্শগত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছিলাম—যেসব বিষয় যুক্তরাষ্ট্রকে মহান করে তুলেছিল। চীনের পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে আমরা তাদের সবকিছু গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তবে মার্কিন ব্লুপ্রিন্টে চীনের অর্থনৈতিক সমন্বয়ের কারণে আমাদের জীবন বদলে গিয়েছে।
কয়েক দশক আগে একজন পণ্ডিত ব্যক্তি আমাদের বলেছিলেন যে চাঁদ নাকি চীনের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বেশি গোল। আমি ও আমার স্কুলের বন্ধুরা এটা বিশ্বাসও করেছি। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে দেশের বাইরে অন্যান্য দেশে যুক্তরাষ্ট্রের অনৈতিক যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া, বেপরোয়া অর্থনৈতিক নীতি এবং যার ফলে গত বছর ইউএস ক্যাপিটলে ন্যক্কারজনক হামলা হয়—এসব দেখার পর আমিসহ চীনের অনেক নাগরিক আর যুক্তরাষ্ট্রকে আলোকবর্তিকা বলে ভাবতে পারছেন না।