সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ের কবলে, ট্রলারের কলকবজা বিগড়ে অথবা ডাকাতের আক্রমণে প্রায় প্রতি মাসেই জেলেরা পথ হারান। কেউ চিরতরে হারিয়ে যান। কেউ প্রতিবেশী দেশের নৌবাহিনী বা আধা সামরিক বাহিনীর নজরে পড়ে উদ্ধার হন।
ভাগ্য ভালো থাকলে দেশে ফিরে আসেন অথবা সে দেশের জেলখানায় থাকেন বছরের পর বছর। শহীদুল্লা কায়সারের সারেং বৌ উপন্যাসে উপকূলীয় অঞ্চলের এ সংকট ও সংগ্রামের কথা আছে। নীল দরিয়ায় গিয়ে নিখোঁজ হলে উপকূলে অপেক্ষায় থাকা পরিবার-পরিজনের, বিশেষ করে স্ত্রী ‘নবিতুন’দের যে কী কঠিন জীবন যাপন করতে হয়, তার বর্ণনা এখনো সত্য। সত্য তাদের সন্তানদের বাল্যবিবাহ আর শিশুশ্রমে বাধ্য হওয়ার কাহিনি।
গত ১২ ও ১৮ আগস্টের বিরূপ আবহাওয়ায় বাংলাদেশের জলসীমায় বেশ কিছু ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এসব ট্রলারের জেলেদের অনেকেই ভাসতে ভাসতে প্রতিবেশী দেশের জলসীমায় সে দেশের নানা বাহিনী বা অন্য জেলে নৌকার সহযোগিতায় রক্ষা পান। তবে বেশ কিছু ট্রলার ডুবে যায় ভারতের জলসীমায়।
ভাগ্যবান ৩২
একটি ঘটনায় ডুবে যাওয়া ৩টি ট্রলারের ভাসতে থাকা ৩২ জেলেকে ভারতের কোস্টগার্ড উদ্ধার করে গত ২৩ আগস্ট বাগেরহাটের মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের কাছে ফেরত পাঠায়। মোংলা পশ্চিম জোনের কোস্টগার্ড অপারেশন বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ ও ১৯ আগস্ট ঝড়ের কবলে পড়ে ইঞ্জিনের ত্রুটি দেখা দিলে তিনটি ট্রলার ভাসতে ভাসতে ভারতের জলসীমায় ঢোকে।
ভারতের কোস্টগার্ড ২০ আগস্ট প্রথমে ১০ জেলেকে তাদের জলসীমায় ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে। উদ্ধার জেলেদের কাছ থেকে আরও জেলে নিখোঁজের খবর জানা গেলে সে দেশের কোস্টগার্ডের জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের টহল চালিয়ে ভাসমান আরও ২২ জেলেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এরপর দুই দেশের কোস্টগার্ডের সমঝোতার মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্র নিয়ন্ত্রণরেখায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড জাহাজ তাজউদ্দীনের কাছে হস্তান্তর করে।