রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হলে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামছুল ইসলামের কানের পর্দা ফেটে গেছে। গত ১৯ আগস্ট হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে চাঁদা না পেয়ে সাড়ে তিনঘণ্টা আটকে রেখে সামছুলকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি বাঁ কানে শুনছিলেন না। গত বুধবার রাতে কানের ব্যথা নিয়ে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার পরীক্ষার ফলে জানা যায় তাঁর কানের পর্দা ফেটে গেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামছুল ইসলাম জানান, মারধরের ঘটনার পর থেকেই তিনি বাঁ কানে শুনছিলেন না। বুধবার রাতে হঠাৎ কানে তীব্র ব্যথা অনুভূত হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান ও গলা বিভাগের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন। পরে চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা দেন। পরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে চিকিৎসক জানান, বাঁ কানের পর্দা ফেটে গেছে।
সামছুল ইসলাম সমকালকে বলেন, 'ভাস্কর সাহা আমার কানে ধাপ্পড় মেরেছিল। তখন থেকেই কানে শুনি না। ওই ঘটনার পর থেকে শরীর দুর্বল। আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে খুবই অশান্তিতে আছি। প্রশাসনকে বলে আমাকে একটু চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন। খুবই কষ্টে আছি'
গত ১৯ আগস্ট শুক্রবার বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত মতিহার হলের কক্ষে আটকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেন সামছুল ইসলাম। শুক্রবার রাতেই ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর দপ্তরে অভিযোগ দেন তিনি। তিনি সেসময় অভিযোগ করেন, ঘটনা কাউকে বললে আবরারের যে অবস্থা হয়েছে, সেই অবস্থা করার হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা। ওই রাতেই তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দপ্তর।
এরপর টানা দুই দিন অর্থনীতি বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক মিলে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানান। ভুক্তভোগীর নিরাপত্তার দাবিও তোলা হয়। বর্তমানে তদন্ত কমিটি তদন্ত করছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও সহকারী প্রক্টর ড. আরিফুর রহমান এর আগে গণমাধ্যমকে জানান, তাঁরা মারধরের প্রমাণ পেয়েছেন।