সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করা হয়। অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে তিনি স্ত্রী মাহমুদাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এ জন্য সোর্সের (তথ্যদাতা) মাধ্যমে তিনি তিন লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। মাহমুদা হত্যা মামলায় পিবিআইয়ের তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। এতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। পিবিআইয়ের তদন্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে অভিযোগপত্র দাখিলের পক্ষে গতকাল মঙ্গলবার মত দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি। আগামী সপ্তাহে পিবিআই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারে বলে জানা গেছে।
২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় গুলি করে ও কুপিয়ে মাহমুদাকে হত্যা করে দুর্বত্তরা। এ সময় তিনি বড় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে জিইসি মোড়ে গিয়েছিলেন। ঘটনার সময় বাবুল ঢাকায় ছিলেন। পরে তিনি চট্টগ্রামে গিয়ে ওই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। বাবুলের করা মামলার অভিযোগপত্রে তাঁকে প্রধান আসামি করা হচ্ছে।
অভিযোগপত্রে নাম আসা অন্য ছয় আসামি হলেন মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া। এঁদের মধ্যে মুসা ও খাইরুল ঘটনার পর থেকে পলাতক। বাবুল, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার কারাগারে আছেন। আর এহতেশামুল জামিনে আছেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযোগপত্রে চারজনকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। এঁরা হলেন সাইদুল ইসলাম শিকদার ওরফে সাক্কু, নুরুন্নবী, মো. রাশেদ ও আবু নাছের। এঁদের মধ্যে রাশেদ ও নুরুন্নবী ঘটনার কয়েক দিন পর পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘অন্য নারীর সঙ্গে বাবুলের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে—এমন বিষয় মাহমুদা জানার পর দুজনের সম্পর্কে অবনতি হয়। এরপরই তিন লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে বাবুল তাঁর স্ত্রীকে খুন করান। সাক্ষী ও আসামিদের জবানবন্দী এবং তদন্তে খুনের পুরো চিত্র উঠে এসেছে। পিবিআই তদন্তের সাক্ষ্য স্মারকের সারসংক্ষেপ (এমই) দিয়েছে। তদন্তে একমত পোষণ করে অভিযোগপত্র জমা দিতে মতামত দিয়েছি।’