প্রবাসী স্বামীকে শিক্ষা দিতে শিশু সন্তানকে মারধর। তারপর সেই দৃশ্য ভিডিও করে পাঠানো হয় স্বামীকে। পরে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন স্বামী। নির্যাতনের দৃশ্য দেখে শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ।
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের পারভীন আক্তার এমন কাণ্ড করেন। শিশুটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরে মা-সহ ওই শিশুকে আদালতের হেফাজতে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শাহরাস্তি মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান। শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট মডেল থানা পুলিশ জানিয়েছে, পারভীন আক্তারের তিন বছর আগে বিয়ে হয় কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার আশিয়াদারি গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে প্রবাসী মহিনউদ্দিনের। তাদের সংসারে ফাহাদ (২) নামের একটি সন্তান রয়েছে। তবে বিয়ের এক বছর পর থেকে তাদের দাম্পত্য কলহ দেখা দিলে স্ত্রী পারভীন আক্তার বাবার বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
লিগ্যাল এইড চাঁদপুর কার্যালয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে ভরণপোষণ বাবদ প্রতিমাসে আট হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মহিনউদ্দিন ঠিকমতো সেই টাকা না দেওয়ায় সম্প্রতি পারভীন তাদের সন্তানকে নির্যাতন করে তার ভিডিও ধারণ করে স্বামীকে পাঠান। ঘটনা সম্পর্কে পারভীন আক্তার জানান, বিয়ের পর থেকে তার স্বামী পর নারীতে আসক্ত। তাই এসবের প্রতিবাদ করায় তাদের ভরণপোষণ বন্ধ করে দেন স্বামী। এতে স্বামীকে শিক্ষা দিতেই তিনি শিশু সন্তানকে নির্যাতন করে ভিডিও পাঠিয়েছেন। শিশুটির দাদা আব্দুল করিম বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও ছেলের বউয়ের বদমেজাজ এবং উগ্রতা বন্ধ করা যায়নি। পুলিশ উদ্ধার না করলে আমার নাতিকে হয়তো মেরেই ফেলতো। ’ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান বলেন, ‘শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিকটাত্মীয় বা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে। নির্যাতনকারী মাকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’