নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস। ২৭ বছরের শিক্ষকতা জীবনের প্রায় শেষ পর্বে এসে তিনি পেয়েছেন জুতার মালা! অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরিয়ে দিচ্ছে তারই ছাত্র, দুই পাশে দাঁড়িয়ে দুই জন পুলিশ সদস্য। ছবিতে তাদের নির্বিকার চেহারা দেখে মনে হয়েছে, জুতা পরানোর কাজেই যেন পাহারা দিচ্ছে!
শিক্ষককে প্রহার ও জুতার মালা পরানোর কারণটা কী? কারণ তিনি ধর্ম অবমাননা করেছেন। ধর্ম অবমাননা কীভাবে করেছেন? গত ১৮ জুন একদল উত্তেজিত ছাত্র সেই কলেজের একজন হিন্দু ছাত্র ভারতের নূপুর শর্মার পক্ষে পোস্ট দিয়ে ইসলামধর্মের অবমাননা করেছে বলে অভিযোগ জানায়। স্বপন কুমার বিশ্বাস বুদ্ধিমানের মতোই সঙ্গে সঙ্গে থানায় ফোন করেন। এই ফোন করাই নাকি তার অপরাধ। এই ফোন করাটাই ধর্মের অবমাননা। পুলিশে ফোন দিয়ে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস নাকি ঐ অভিযুক্ত ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন। সম্ভবত পুলিশও সেটা মনে করে, এ কারণে স্বপন কুমারকে তারা জুতার মালা পরানো থেকে রক্ষা করেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই শিক্ষক স্বপন কুমারের সম্মান ‘হত্যা’ করে তার ‘ছাত্ররা’! ‘হত্যা’ বলাই সংগত, কারণ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সামনে একজন শিক্ষককে বিনা দোষে মারধর ও জুতার মালা পরানো কি তাকে মানসিকভাবে হত্যা করা নয়? তার স্ত্রী-সন্তানদের ‘হত্যা’ করা নয়?