২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা দিবস। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল যে রাজনৈতিক দলের, ২০২২ সালের ২৩ জুন সে দলটি ৭৩ বছর অতিক্রম করে ৭৪ বছরে পা দিচ্ছে। দীর্ঘ সময়। দীর্ঘ পথপরিক্রমা। জন্মলগ্নে নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। ১৯৫৪ সালে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামেই দলটির পরিচিতি এবং বিস্তৃতি ঘটতে থাকে। এই দলের প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, উদ্যোগী ছিলেন, তারা সবাই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন। পাকিস্তান জন্ম নেওয়ার দুই বছর না ঘুরতেই কেন একটি নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম দিতে হলো, তা অবশ্যই ভাববার বিষয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার গর্ভজাত দল নয়। ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরতেই এই দল গড়ে উঠেছিল। তাই এটা বলা যায় যে, জনগণের প্রয়োজনে জনগণের দল হিসেবেই আওয়ামী লীগের গড়ে ও বেড়ে ওঠা।
আওয়ামী লীগ নিয়ে লিখতে বসে বইপত্র দেখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘কারাগারের রোজনামচা’-এর পাতা উল্টাতে গিয়ে একটি জায়গায় চোখ আটকে গেল। জেলের ভেতর বাগান পরিচর্যার প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন: “বাজে গাছগুলো আমি নিজেই তুলে ফেলি। আগাছাগুলিতে আমার বড় ভয়। এগুলি না তুললে আসল গাছগুলি ধ্বংস হয়ে যাবে। যেমন আমাদের দেশের পরগাছা রাজনীতিবিদ-যারা সত্যিকারের দেশপ্রেমিক তাদের ধ্বংস করে এবং করতে চেষ্টা করে। তাই পরগাছাকে আমার বড় ভয়।”
আজীবন যিনি ছিলেন সাহসের প্রতীক, সেই বঙ্গবন্ধু যে পরগাছাকে ভয় করতেন আজ তার গড়া দল আওয়ামী লীগে কি আমরা পরগাছা বেশি দেখতে পাচ্ছি না? অবশ্য দেখার চোখ তো আবার সবার এক নয়। আমি যাকে বা যাদের পরগাছা ভাবছি, আরেকজন তাকেই সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ভাবতে পারেন!